গরিব শিশুদের কাছে “মসীহা” হয়ে উঠলেন এই পুলিশকর্মী! ডিউটির অবসরে গাছের তলায় চলছে “ফ্রি স্কুল”

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের সমাজে নিরাপত্তার দায়িত্ব যাঁদের হাতে অর্পিত থাকে তাঁরা হলেন পুলিশকর্মী। পাশাপাশি, যেকোনো রকমের অসুবিধের সম্মুখীন হয়ে তাঁদের কাছে গেলেই পাওয়া যায় সমাধান। যদিও, বর্তমান সময়ে একাধিক ঘটনায় পুলিশদের সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও সেই আবহে এমন কিছু দৃষ্টান্তমূলক ঘটনার প্রসঙ্গ সামনে আসছে যেখানে তাঁরা কার্যত মানবিকতার মুহূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছেন। সম্প্রতি ঠিক সেই রকমই এক পুলিশকর্মীর খোঁজ পাওয়া গেছে যিনি গরীব শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য বিনামূল্যের একটি স্কুল শুরু করেছেন।

যদিও, সেই স্কুলের নেই কোনো ছাদ কিংবা ঘর! খোলা আকাশে গাছের তলাতেই তিনি পড়িয়ে চলেছেন বাচ্চাদের। মূলত, উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা জেলায় এই মহতী উদ্যোগে সামিল হয়েছেন সাব ইন্সপেক্টর রঞ্জিত যাদব। গত চার-পাঁচ মাস যাবৎ রঞ্জিত এই কর্মকাণ্ড শুরু করেছেন। এদিকে, ওই পড়ুয়াদের পড়ানোর পাশাপাশি তিনি সংশ্লিষ্ট এলাকায় থাকা অভিভাবকদের শিক্ষা, পরিচ্ছন্নতা ও নেশা মুক্ত করার বিষয়ে সচেতন করে চলেছেন। এছাড়াও, তিনি তাঁর ওই স্কুলের নাম দিয়েছেন “আপনা স্কুল”।

উল্লেখ্য যে, আজমগড়ের একটি ছোট গ্রাম ভাদসারের বাসিন্দা রঞ্জিত বিএইচইউ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর করেছেন। জানা গিয়েছে, সকালে প্রথমে তিনি ওই শিশুদের পড়ান, তারপর তিনি তাঁর নিজের কাজও সামলান। এছাড়াও, রঞ্জিতের এই উদ্যোগে কৃষি বিভাগে নিযুক্ত প্রমোদ যাদবও সহযোগিতা করেন।

কি জানিয়েছেন তিনি: এই প্রসঙ্গে সাব ইন্সপেক্টর রঞ্জিত যাদব জানিয়েছেন, “সম্প্রতি আমি আমার নিজের স্কুল চালু করেছি এবং যখনই ছুটি পাই তখনই এই শিশুদের পড়াই। আমি কয়েক মাস ধরে তাদের সবাইকে পড়াচ্ছি। তাদের বাবা-মাকে ভিক্ষা করতে দেখতাম আমি। তারপর তাঁদের সাথে কথা বলে জানতে পারি, অনেকেই সন্তানদের শিক্ষিত করতে চান। একই সঙ্গে সেখানে লেখাপড়া করতে আসা বাচ্চারাও আনন্দ প্রকাশ করছে।” পাশাপাশি, সেখানকার পড়ুয়ারাও জানিয়েছে যে, “আমরা পড়াশোনা করে স্কুলে যেতে চাই। আমরা এখানে পড়াশোনা করতে ভালোবাসি। তাই এখানে নিয়মিত আসি।”

উল্লেখ্য যে, বর্তমানে ওই স্কুলে পঞ্চাশজনেরও বেশি পড়ুয়া পড়াশোনা করতে আসছে। খোলা মাঠ বা গাছের নিচেই চলছে ক্লাস। এছাড়াও, এই দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বই, খাতা সহ বিভিন্ন প্ৰয়োজনীয় সামগ্রীও দেওয়া হয়। এমতাবস্থায়, রঞ্জিত যাদবের এই কাজ নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত করবে সবাইকে। সর্বোপরি, তাঁর এই উদ্যোগের খবর সামনে আসতেই তাঁকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন সকলে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর