বাংলা হান্ট ডেস্ক: এই বয়সে আর পাঁচজনের মতোই স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল তার। এমনকি, খেলার মাঠে খেলতে যাওয়ার সময়টাও আর নেই! পড়াশোনা তো দূর, এই বয়সেই জীবনরক্ষার তাগিদে সে ধরেছে সংসারের হাল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে নিজের শৈশবেই দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে বাবা-মায়ের জন্য অন্নসংস্থান করছে ছোট্ট আরফ।
বাবা মানসিক বিকারগ্রস্থ, করতে পারেননা কোনো কাজই। বাবার খেয়াল রাখতে গিয়ে মাকেও থাকতে হয় বাড়িতেই। গোরুর দুধ বিক্রি করে যেটুকু তার মা যায় করেন তা যৎসামান্য হওয়ায় চলেনা সংসার। এমতাবস্থায়, সংসার চালানোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে আরফ। যে কারণে, তৃতীয় শ্রেণির বেশি পড়তে পারেনি সে। তবে, পড়ার অদম্য ইচ্ছে এখনও আছে তার মধ্যে! কিন্তু, সে ইচ্ছে থেকে গেছে মনের ভেতরেই। কঠিন বাস্তবের কাঠিন্যে ইচ্ছে থাকলেও তো উপায় নেই!
আপাতত শাক বিক্রি করেই দিন গুজরান করছে আরফ। সারা দিন ঘুরে ঘুরে শাক বিক্রির পর বাড়ি পৌঁছতেও হয়ে যায় অনেক রাত। মাঝে মাঝে তো আবার দুপুরে জোটেনা খাওয়ারও। কিন্তু, তাও তার মুখে লেগে রয়েছে হাসি! জীবনের কঠিন সত্যকে সে স্বীকার করেছে আনন্দের সাথেই।
এক দিদিও রয়েছে আরফের! তবে দিদির বিয়ে হয়ে গেলেও জামাইবাবু বলতে পারেন না কথা। সমস্ত প্রতিবন্ধকতা গ্রাস করলেও মনের জোর নিয়ে নিজের মতো করে এগিয়ে চলেছে আরফ। প্রতিদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে নিজেকে নিংড়ে দিলেও স্বপ্ন দেখতে ভোলেনি সে!
পাকা ইটের বাড়ি বানিয়ে মা-বাবাকে নিয়ে একসাথে ঘুমোতে চায় ছোট্ট আরফ! আর সেই স্বপ্ন পূরণেই লক্ষ্য স্থির রেখেছে সে। ইতিমধ্যেই আরফের এই বাস্তব কাহিনির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। সেখানেই নিজের জীবনের কঠিন সত্যকে তুলে ধরেছে আরফ। বাংলাদেশের আমদই ইউনিয়নের বাসিন্দা আরফ হকের এই ভিডিও ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখেছেন।
পাশাপাশি, স্কুল, খেলার মাঠ ছেড়ে সে যেভাবে সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে তা দেখে চোখের কোণা ভিজেছে সকলেরই। কয়েক হাজার মানুষ কমেন্ট করে তাঁর এই স্বপ্নপূরণের সাথী হতে চেয়েছেন। এমনকি, জীবনযুদ্ধের ময়দানে এই খুদে যোদ্ধাকে স্যালুট জানিয়েছেন সবাই।