বাংলা হান্ট ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ (Loksabha Election 2024) কে ঘিরে রীতিমতো সরগরম রাজ্য রাজনীতি। নির্বাচনী আবহেই ভোটের প্রচারে গিয়ে নেতা-মন্ত্রীদের করা ছোট থেকে ছোট মন্তব্যে আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজ্য রাজনীতি। এরই মধ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) করা ‘সন্ন্যাসী’ মন্তব্য (Saint Comment) নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) এবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের করল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (Vishva Hindu Parishad)।
তাঁদের সাথেই তৃণমূল সুপ্রিমের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছেন কয়েকজন মহারাজ-ও ।জানা হচ্ছে চলতি সপ্তাহেই প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হতে পারে। প্রসঙ্গত, এদিনের এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল শনিবার আরামবাগে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা থেকে।
সেখানে তিনি সরাসরি নাম করেই রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের কয়েকজন সাধু সন্ন্যাসীদের সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করে ‘ডাইরেক্ট পলিটিক্স’ করার অভিযোগ তুলেছিলেন। সেদিনের সভাতে তিনি যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন তাতে মূলত উঠে এসেছিল মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সংঘের কার্তিক মহারাজের নাম।মুখ্যমন্ত্রীর সেদিন ভরা সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘‘সব সাধু সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না।
আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? এই যে বহরমপুরের এক জন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘ্যের তালিকায় তারা দীর্ঘ দিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে ‘ডাইরেক্ট পলিটিক্স’ করে দেশটার সর্বনাশ করছে।’
আরও পড়ুন: তৃণমূল আমলের সব OBC সার্টিফিকেট অবৈধ! এক রায়ে ৫ লক্ষ শংসাপত্র বাতিল করল হাইকোর্ট, তোলপাড়
ভোটের আবহে মুখ্যমন্ত্রীর করা মন্তব্যে তোলপাড় হয়ে যায় গোটা রাজনৈতিক মহল। দেশজুড়ে শুরু হয় নিন্দার ঝড়। আর এই সুযোগটাকে হাতিয়ার করেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার দল। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও সরব হয়েছেন খোদ কার্তিক মহারাজও। বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আইনি চিঠি পাঠিয়ে তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন মহারাজ।
কার্তিক মহারাজের দাবি ছিল মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ভিত্তিহীন। তাই ওনার বক্তব্যে তাঁর মানহানি হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন কার্তিক মহারাজ। তাই সম্মানহানি চেষ্টায় মুখ্যমন্ত্রীর অসত্য বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের ওই সন্ন্যাসী। সেইসাথে বলা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী চার দিনের মধ্যে জবাব না দিলে কার্তিক মহারাজ আইনি পদক্ষেপ করবেন। আর এবার মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে ভারত সেবাশ্রম সংঘ। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।