বাংলাহান্ট ডেস্কঃ কথায় আছে জনগনের রায় বড় রায়, আর এই কথাটিই সত্যটি হল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট (President of Russia) ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) জীবনে। সংবিধান সংশোধনের পক্ষে ভোট দিলেন রাশিয়ার অধিকাংশ মানুষ। তার ফলে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত পুতিনের ক্ষমতা ধরে রাখার রাস্তা পুরো পরিষ্কার হয়ে গেল।
রাশিয়ার নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৮৭ শতাংশ ভোট গণনা শেষে দেখা গেছে ৭৭ শতাংশের বেশি ভোট সংবিধান সংশোধনের পক্ষে গেছে। ১ জুলাই ছিল গণভোটের শেষ দিন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোটে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব জেতার সব আয়োজন শেষ করার পরই গণভোট আহ্বান করেছিলেন পুতিন।
সংবিধান সংশোধনে গণভোট পুতিনের পক্ষে যাওয়ায় আরও দুই মেয়াদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। এর ফলে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতলে আরও ১২ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন পুতিন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মস্কো এবং পশ্চিম রাশিয়ার বিভিন্ন অংশে ভোটদানের হার ছিল ৬৫ শতাংশ। কোনও কোনও অঞ্চলে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন বলে দাবি নির্বাচনী আধিকারিকদের। রাশিয়ার পূর্বদিকে অবস্থিত চাচকি উপদ্বীপে তো আবার প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করে জানানো হয়েছে, ৮০ শতাংশ ভোটার সংবিধান সংশোধনের পক্ষে রয়েছেন।
যদিও স্বাধীন ভোট পর্যবেক্ষকরা সেই পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তেমনই একজন গ্রিগরি মেলকোনয়ান্তস সংবাদসংস্থা এপিকে জানান, অনিয়মের ছবিটা স্পষ্ট। অনেক জায়গাতেই ভোটদানের হার বেশি দেখানো হয়েছে।
রাশিয়ার বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, এক ব্যক্তি টানা দুবারের বেশি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। তবে কখনো প্রধানমন্ত্রী আবার কখনো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুই দশক ধরে ক্ষমতা আছেন পুতিন। গত জানুয়ারিতেই আরও দুবার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের বিধান রেখে সংবিধান সংশোধনের খসড়ায় স্বাক্ষর করেন পুতিন।
ব্যাপক প্রচার এবং বিরোধীরা সুযোগের সদ্বব্যহার করতে না পারায় গণভোটে দু’দশকের বেশি রাশিয়ার ক্ষমতার শীর্ষে থাকা পুতিনের সেই আশও মিটেছে। তবে ২০২৪ সালে ভোট লড়বেন কিনা, সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
সেই সিদ্ধান্ত যে কী হবে, তা জলের স্পষ্ট রাজনৈতিক মহলের কাছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা ধরে রাখার পথ প্রশস্ত হলেও তা আদতে পুতিনের গলায় কাঁটা হয়ে বিঁধতে পারে। কারণ ভোটদানের হার বাড়াতে যে উপায় নেওয়া হয়েছিল এবং ব্যালটের সন্দেহজনক আইনি ভিত্তির জেরে রাশিয়ায় পুতিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরও পুঞ্জীভূত হয়েছে।