বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শবদেহ কাণ্ডের জের! রাগে- অভিমানে তৃণমূল (Trinamool) অ্যাম্বুল্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের (Ambulance Association) সঙ্গ ছাড়তে চান অ্যাম্বুল্যান্স কাণ্ডে ধৃত জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) স্বেচ্ছাসেবী অঙ্কুর দাস (Ankur Das)। অঙ্কুরবাবু জানান, শাসকদল প্রভাবিত সেই অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিলীপ দাসই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। শুধু তাই নয়, এরপর পুলিশ দ্বারা গ্রেফতার হওয়ার পরও তিঁনি দল তরফে কোনো সাহায্য পাননি। এই ক্ষোভেই তৃণমূল কিষান (TMC Kisan) ক্ষেতমজুর সংগঠনের সদস্যপদ ছাড়লেন বলে ঘোষণা করেন অঙ্কুর দাস।
অঙ্কুরবাবুর দাবি, বর্তমানে তিঁনি তৃণমূল কিষান ক্ষেতমজুর সংগঠনের জেলা কমিটির সদস্য। শুধু তাই নয়, অঙ্কুর এও জানান, ২০০৮ সাল থেকে দলের বিভিন্ন পদে তিঁনি দায়িত্ব পালন করেছেন।তবে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিঁনি বলেন, “এবার উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব। সেই কাজে কলকাতা যেতে হবে। জেলা আদালতের কাছে কলকাতা যাওয়ার অনুমতি চেয়েছি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। কিন্তু আপাতত আমি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগদান করছি না।”
অন্যদিকে, অঙ্কুরবাবুর এই দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল কিষান ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের জেলা সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি জেলাপরিষদের সহকারী সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ। তাঁর কথায় ,অঙ্কুর কোনওভাবেই তৃণমূল কিষান ক্ষেতমজুর সংগঠনের সঙ্গে জড়িতই ছিলেন না। পাশাপাশি তিঁনি এও বলেন এ শুধুমাত্র লাইমলাইটে আসার প্রচেষ্টা। এর পেছনেও বিরোধী দল বিজেপির হাত রয়েছে।
পাশাপাশি বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে হাসপাতাল চত্বরে থাকা অ্যাম্বুল্যান্স অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অঙ্কুর। প্রসঙ্গত, এই ঘটনার সূত্র গত ৫ জানুয়ারি। ক্রান্তির বাসিন্দা লক্ষ্মীরানি দেওয়ানের মৃত্যুর পর জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে তাঁর দেহ কাঁধে নিয়ে হাটতে দেখা যায় ছেলেকে। ছেলে রামপ্রসাদ অভিযোগ করেন, জলপাইগুড়ি থেকে মূর্তি পর্যন্ত দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য ৩০০০ টাকা দাবি করছে অ্যাম্বুল্যান্স। অন্যদিকে সেই পরিমান টাকা দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় শদেহ কাঁধে করে নিয়েই রওনা দেন ছেলে। এরপর এই ঘটনার খবর পেয়ে যুবককে শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এই কর্ণধার অঙ্কুর দাস।
এই ঘটনার পরেই বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়, পুরো ঘটনাটিই পূর্ব পরিকল্পিত। রাজ্য সরকার এবং অ্যাম্বুল্যান্স সংগঠনের নাম খারাপ করার জন্যই অঙ্কুর এমনটা করেছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এরপরেই তাঁর বিরুদ্ধে সরকারের নামে অপপ্রচারের অভিযোগ তুলে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় অঙ্কুরবাবুকে। তারপর ৪ দিন হেফাজতে থাকার পর গত রবিবার জামিন পায় অঙ্কুর দাস।