প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন চীনের বিদেশমন্ত্রী, মুখের ওপর ‘না’ করে দিলো ভারত

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভারত চিন সম্পর্কের অবনতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার ভারতে আসেন চিনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াং ই। শুক্রবার একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক সারেন তিনি। সূত্রের খবর, ওয়াং ই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তার উত্তরে নাকি কড়া জবাবই দিয়েছে ভারত। একই সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছ্র সেই আবেদনও।

জানা যাচ্ছে, শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতেই ভারতে ঝটিকা সফরে আসেন চিনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই। শুক্রবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশও করেন তিনি। কিন্তু নয়া দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের শপথ গ্রহণের অজুহাত দেখিয়ে প্রত্যাখ্যান করে সেই প্রস্তাব। স্পষ্টতই জানিয়ে দেওয়া হয় যে প্রধানমন্ত্রী লখনউতে ব্যস্ত রয়েছেন। তাই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্ভব নয়।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে ওয়াং ই চিন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলেও খবর। ই বিষয়ে অবশ্য ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই মিলেছে নিরাপত্তা উপদেষ্টার তরফে। অজিত ডোভাল জানিয়েছেন যে, বর্তমান সমস্যাগুলির সমাধানের পর বেজিং সফর নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারেন তিনি।

উল্লেখ্য, শুক্রবার চিনা পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বিবৃতি দিয়েছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘ভারত এবং চিনের মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতির অগ্রগতি খুব ধীর। ওয়াং ই এর সঙ্গে সাক্ষাতে সেই বিষয়টি তরান্বিত করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিলে ভারতীয় সীমান্তে চিনের অনুপ্রবেশের সময় দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রস্তাবিত হয়েছিল। কিন্তু তাতে অনেকগুলি বাধা ছিল। এই দুই বছরে সীমান্তে উত্তেজনা বেড়েছে দুই দেশের মধ্যে।’ এদিনের এই বৈঠকে সীমান্তে আন্তর্জাতিক চুক্তি মেনে চলার দিকেও জোর দেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। একই সঙ্গে চিনা বাহিনী সম্পুর্ণ প্রত্যাহারের জন্যও বলা হয় ভারতের তরফে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পাকিস্তানে কাশ্মীর প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য করতে দেখা যায় চিনা বিদেশ মন্ত্রীকে। সেখানে তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর নিয়ে ফের একবার অনেক ইসলামিক বন্ধুদের ডাক শোনা যাচ্ছে। চিনও এই বিষয়ে একই আশা রাখছে।’ আর এর প্রেক্ষিতেই কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী সাফ জানিয়েছেন যে, ‘জম্মু ও কাশ্মীর সম্পুর্ণ রূপে ভারতের আভ্যন্তরীণ একটি বিষয়। এই ব্যাপারে চিন বা অন্য কোনও দেশেরই কোনও মন্তব্য করার অধিকার নেই।’ কাশ্মীর ইস্যুতে কেউ নাক গলাতে এলে যে ফল ভালো হবে না, সেকথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। এরপরই গতকালের বৈঠকে সীমান্তে আন্তর্জাতিক চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলে দুপক্ষের।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর