বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আফগানিস্তান জেলে বন্দি কেরলের নিমিশা ওরফে ফাতিমার মায়ের আশা যে, মোদী সরকার ওনার মেয়েকে ক্ষমা করে দেবে আর ভারতে আনার প্রক্রিয়া শুরু করবে। বলে দিই, ফাতিমার স্বামী একজন ISIS জঙ্গি ছিল, আর ফাতিমাও জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত হতে ভারত থেকে আফগানিস্তান চলে যায়। কিন্তু আফগান সেনার অভিযানে তাঁর স্বামী মারা যায় আর সে আপাতত আফগানিস্তানের জেলে বন্দি।
ফাতিমার মা বিন্দু সম্পত বলেন, ‘আমি শুনেছি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খুবই দয়ালু মানুষ। আমি ওনার উপর ভরসা করি।” উনি এই কথা মিডিয়ায় আসা সেই খবরের পর বলেছেন, যেখানে বলা হয়েছিল যে আফগানিস্তান জেলে বন্দি কেরলের চার মহিলা জঙ্গিকে ভারতে ফিরিয়ে আনায় ইচ্ছুক না মোদী সরকার। বলে রাখি, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের জেলে কেরলের চার মহিলা জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত থাকার জন্য বন্দি অবস্থায় রয়েছে।
ফাতিমার মা বলেন, এই বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে আমাকে কোনোকিছু জানানো হয়নি। সরকারের এই বিষয়ে কোনোকিছু না বলা কেন্দ্রীয় নীতির অংশ হতে পারে, তবে আমি মোদী সরকারকে নিয়ে আশাবাদী। আমি আশা করছি সরকার আমার মেয়েকে ক্ষমা করে দিয়ে ভারতে ফিরিয়ে আনার বন্দোবস্ত করবে। ফাতিমার মা বলেন, আমি ভগবানে বিশ্বাস করি। ভগবান আমার মেয়েকে ফেরত আনার জন্য কোনও কিছু করবে।
ফাতিমার মা এও বলেন যে, আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই বিষয়ে স্মারকলিপি দিতে চাই, কিন্তু কেউ আমাকে সাহায্য করছে না। বিন্দু বলেন, আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সৈন্য ফেরৎ যাওয়ার পর আমার মেয়ে তালিবানের কবজায় চলে যেতে পারে। আমি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এই বিষয়ে একটি ই-মেলের মাধ্যমে অবগত করিয়েছিলাম, কিন্তু এখনও কিছু হয়নি।
বিন্দু সম্পত বলেন, যদি আমার মেয়েকে ভারতে ফেরৎ আনার জন্য সরকারি সাহায্য না পাই, তাহলে আমি আইনি লড়াই লড়ব। আমি সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। ওনারা জানিয়েছেন আমাদের কাছে আইনি রাস্তা খোলা আছে।
বলে দিই, ফাতিমা প্রথমে হিন্দু ছিল। কিন্তু বিয়ের পর সে ইসলাম ধর্ম আপন করে নেয় আর নিজের নাম নিমিশা থেকে ফাতিমা করে নেয়। কেরলের বাসিন্দা আইএস জঙ্গির সঙ্গে বিয়ে করেছিল নিমিশা। স্বামী-স্ত্রী ২০১৬ সালের জুন মাসে অন্যান্য জঙ্গিদের সঙ্গে ভারত ছেড়ে আফগানিস্তানে চলে গিয়েছিল। ফাতিমা সেখানে গিয়ে একটি সন্তানেরও জন্ম দেয়।
ফাতিমা সহ কেরলে আরও তিন মহিলা জঙ্গি ২০১৯ সালে আফগান সেনার একটি অভিযানে স্বামীর মৃত্যুর পর আত্মসমর্পণ করে। তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে, আফগান জেলে বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে, কিন্তু ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় এখনও তাঁরা বন্দি অবস্থায় রয়েছে। বিন্দু সম্পত দেড় বছর আগে তাঁর মেয়ে আফগান জেলে বন্দি আছে সেই খবর পেয়েছিল। কিন্তু তাঁকে ফিরিয়ে আনার জন্য এখনও কিছু করতে পারেনি সে।