ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রে WAQF কোনও আবশ্যিক অংশ নয়! সুপ্রিম কোর্টে দাবি কেন্দ্রের

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মঙ্গলবারের পর ফের বুধবার সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ওয়াকফ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হচ্ছে। গতকাল প্রায় চার ঘণ্টা এই মামলা (WAQF Case) শুনেছিল শীর্ষ আদালত। আজ কেন্দ্রের বক্তব্য শুনছে প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই (CJI BR Gavai) ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহর বেঞ্চ। এদিন দুপুর ১২টা থেকে ফের শুরু হয়েছে এই মামলার শুনানি।

ওয়াকফ মামলায় জোরালো সওয়াল সলিসিটর জেনারেলের- (Supreme Court)

এদিন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘দীর্ঘ আলোচনার পর যৌথ সংসদীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাতারাতি কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়নি। কেন্দ্রের কোনও মন্ত্রক বিলের খসড়া বানিয়েছে আর তা পাশ করানো হয়েছে এমনটা নয়। কয়েকজন মামলাকারী নিজেদের সমগ্র মুসলিম সমাজ হিসেবে দাবি করতে পারে না’।

মেহতা জানান, এই বিল (WAQF Amendment Bill) নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি ৯৬টি বৈঠক করেছে। গোটা ভারত জুড়ে প্রায় ৯৭ লক্ষ মানুষের মতামত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট! তার আগেই পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ‘এই’ তৃণমূল নেত্রী

সলিসিটর জেনারেল এদিন বলেন, ওয়াকফ বোর্ডের ভূমিকা সম্পূর্ণভাবে ধর্মনিরপেক্ষ। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবহার করলেই তার ওপর মৌলিক অধিকার তৈরি হয়ে যায় না’। তুষার মেহতার কথায়, ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রে ওয়াকফ আবশ্যিক অংশ নয়। এমন অনেক মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ আছেন যারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নন। তাঁরা ওয়াকফে সম্পত্তি দান না করলে কি মুসলিম নন? কোনও কিছু দান যে কোনও ধর্মের অংশ, তবে সেটা আবশ্যিক নয়।

সংশোধিত ওয়াকফ আইনে কী সুবিধা রয়েছে এদিন সুপ্রিম কোর্টে তা জানান সলিসিটর জেনারেল মেহতা (Tushar Mehta)। তিনি বলেন, ‘’ওয়াকফ আলাল আওলাদ’ বলে আগে একটি ধারণা ছিল। এর মানে, সন্তানদের সুবিধার জন্য আল্লাহর উদ্দেশে সম্পত্তি উৎসর্গ করা। এখানে সন্তান বলা হলেও, সংশোধিত ওয়াকফ আইন আসার আগে প্রাথমিকভাবে কন্যা সন্তান অথবা বিধবাদের অন্তর্ভুক্ত করা হতো না। তাঁদের এই প্রথম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সৌভাগ্যবশত যা চ্যালেঞ্জ করা হয়নি’।

Supreme Court hearing of plea against WAQF Amendment Bill

এছাড়া মেহতা দাবি করেন, ইসলাম ধর্মের কোনও আবশ্যিক কর্তব্যের ওপর সংশোধিত ওয়াকফ আইন হস্তক্ষেপ করে না। একইসঙ্গে নতুন আইনের (WAQF Amendment Act) ৩ডি ধারা নিয়েও মুখ খোলেন সলিসিটর জেনারেল।

গতকাল এই ধারার ওপর স্থগিতাদেশের আবেদন জানান মামলাকারীর আইনজীবীরা। এদিন প্রধান বিচারপতি গাভাই জিজ্ঞেস করেন, যৌথ সংসদীয় কমিটি যখন গঠন হয়, তখন কি নয়া আইনের ৩ডি নং ধারা ছিল? জবাবে সলিসিটর জেনারেল বলেন, যৌথ সংসদীয় কমিটির রিপোর্টের প্রস্তাবিত এই ধারার প্রসঙ্গ উল্লেখ ছিল। একথা শুনে প্রধান বিচারপতি ফের জিজ্ঞেস করেন, পরবর্তী সময়ে যুক্ত করা হয়েছে, এমন নয় তো? জবাবে মেহতা জানান, এমনটা হয়নি। মূল সংশোধনীর মধ্যেই ৩ডি ধারা ছিল।

উল্লেখ্য, সংশোধিত ওয়াকফ আইন গোটা দেশ জুড়ে কার্যকর হওয়ার পর থেকেই নানান জায়গায় বিক্ষোভের ছবি দেখা গিয়েছে। এই আইন প্রত্যাহারের দাবি উঠেছে। জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) অবধি। গতকালের পর আজও এই মামলায় দীর্ঘ শুনানি হচ্ছে। শীর্ষ আদালত আজ কোনও নির্দেশ দেয় কিনা সেটাই দেখার।

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

X