বাংলা হান্ট ডেস্ক: জীবনে চলার পথে আত্মবিশ্বাস এবং জেদ থাকলে যে ঠিক সফল হওয়া যায় তা ফের একবার প্রমাণিত হল। শুধু তাই নয়, সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে দিয়েই নিজের লক্ষ্যপথে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা আরও চওড়া করে ফেললেন সূরজ। তবে, তাঁর পরিচয় পেলে নির্ঘাত আপনি চমকে যাবেন। কারণ, তিনি একজন আসামি।
অথচ এই পরিচিতি নিয়েই তিনি আজ উঠে এসেছেন খবরের শিরোনামে। খুনের দায়ে জেল হলেও পড়াশোনার প্ৰতি অমোঘ টান তাঁকে পৌঁছে দিল এক অনন্য জায়গায়। শুধু তাই নয়, ইচ্ছে থাকলেই যে, যে কোনো জায়গা থেকে চলার পথের লক্ষ্য স্থির করে নেওয়া যায় তা কার্যত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন তিনি।
জানা গিয়েছে যে, সম্প্রতি IIT-র জয়েন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট ফর মাস্টার্স (জ্যাম) পরীক্ষায় বসেছিলেন সূরজ। আর সেখানেই বাজিমাত করে ফেলেন তিনি। জেলে বন্দি অবস্থাতেই তিনি উতরে গিয়েছেন IIT-র প্রবেশিকা পরীক্ষা। শুধু তাই নয়, সেই পরীক্ষায় সূরজের র্যাঙ্ক হল ৫৪।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বিহারের নওয়াদা জেলার মোসমা গ্রামের বাসিন্দা সূরজ কুমার যাদব রাজস্থানের কোটায় IIT-র জন্য পড়াশোনা করতেন। কিন্তু, ঘটনাচক্রে সেই সময়েই গ্রামের এক প্রতিবেশীকে খুনের অভিযোগে পুলিশে এফআইআর দায়ের হয় সূরজ যাদব ও তাঁর দাদার নামে। তারপরেই তাঁরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান অন্যত্র।
তবে, করোনা মহামারীর আবহে দেশজুড়ে লকডাউন জারি হওয়ায় গত বছরের এপ্রিল মাসে বাধ্য হয়েই গ্রামে ফিরে আসেন তাঁরা। এমতাবস্থায়, তারপরেই ওই দুই ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন থেকেই নওয়াদা জেলে বন্দি রয়েছেন তাঁরা।
যদিও, অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র সূরজের মাঝপথে ছেড়ে আসা IIT-র কোচিং নিয়ে ভারী আফশোস ছিল। সেই কথা জানতে পারেন নওয়াদা জেলের সুপার অভিষেক পাণ্ডে। শুধু তাই নয়, সূরজের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে তিনি তাঁকে উৎসাহ দিতেও শুরু করেন।
এমতাবস্থায়, সূরজকে প্রয়োজনীয় বইপত্র এনে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই গভীর পরিশ্রম শুরু করে দেন সূরজ। এমনকি, জেল কর্তৃপক্ষ তাঁর পড়াশোনার জন্য এক মাসের প্যারোলও মঞ্জুর করে। শেষে পরীক্ষা দিয়ে দারুণ রেজাল্টের মাধ্যমে সবাইকে অবাক করে দেন তিনি। পাশাপাশি, তাঁর এই সাফল্যে খুশি হয়েছে জেল কর্তৃপক্ষও। জানা গিয়েছে, ভবিষ্যতে বিজ্ঞানী হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন সূরজ।