বাংলাহান্ট ডেস্কঃ গত বছর গ্রীষ্মে তীব্র জলসংকটে ভুগেছিল চেন্নাই। কিন্তু বছর ঘুরতে ঘুরতে সেই জল সংকট আমরা বিস্মৃত হয়েছি। চলছে যথেচ্ছে অপচয়। আমরা অনেকেই ভুলে গেছি, ২০১৮ সালের জুন মাসে প্রকাশিত নীতি আয়োগের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৬০ কোটি ভারতীয় চরম জলকষ্টের শিকার এবং বছরে প্রায় দু’লক্ষের মতো মানুষ মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে। এই অভাব আরও প্রকট হয়ে উঠবে ২০৩০ সাল নাগাদ, যখন চাহিদা অনুযায়ী পানীয় জলের জোগান প্রায় নিঃশেষিত হয়ে পড়বে।
এই জল সংকটের শিকার আমাদের বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বিজ্ঞানী মহল জানাচ্ছে এই সংকট আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হতে চলেছে আগামী কয়েক বছরে। উল্লেখ্য রাঢ় ও ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলের বেশীর ভাগ অংশেই এখনো পৌঁছায়নি পাইপ লাইনের জল, বেশীরভাগ নদীও এখানে গ্রীষ্মকালে শুকনো। সব মিলিয়ে জলসংকট নেয় তীব্র আকার।
বাংলার পুরুলিয়ার ঝালদা, বাঘমুণ্ডি, মানবাজার, বরাবাজার, বান্দোয়ান এবং বাঁকুড়ার রানিবাঁধ, ঝিলিমিলি, রাইপুর, সিমলাপাল, খাতড়া প্রভৃতি এলাকার জলকষ্টের কথা সর্বজনবিদিত। রুক্ষ প্রকৃতিই এই অঞ্চলে জল সংকটের প্রধান কারন হলেও মনুষ্য সৃষ্ট কারনের সংখ্যাও কম নয়। জঙ্গল কেটে বসতি থেকে শুরু করে জল অপচয় তালিকাটা কম নয়।
রাজ্য সরকার ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে বৃষ্টির জল ধরে রাখার প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করলেও বাস্তব ক্ষেত্রে তা কতটা করা হয়েছে তা প্রশ্ন চিহ্নের মুখে। সব মিলিয়ে এখনই সঠিক উদ্যোগ না নিলে এবং সচেতনতা না গড়ে তুলতে পারলে চেন্নাইয়ের পুনরাবৃত্তি বাংলায় হতেই পারে।