বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসির পর ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়) শংসাপত্র মামলার (OBC Certificate) শুনানিও পিছিয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মসিহের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে তা পিছিয়ে গেল। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৮ জানুয়ারি। যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট কোনো স্থগিতদেশ দেয়নি তাই আপাতত ওবিসি শংসাপত্র নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ই বহাল রইল।
এর আগে ওবিসি সার্টিফিকেট মামলায় সময় চেয়েছিল রাজ্য (West Bengal Government)। সুপ্রিম কোর্টে বাংলার OBC- মামলার শুনানিতে জবাব দেওয়ার জন্য রাজ্যের হয়ে আরও কিছুটা সময় চেয়ে নিয়েছিলেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিব্বল। মামলার শেষবারের শুনানিতে শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণে জানায়, শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে কারও সংরক্ষণ পাওয়া উচিত নয়।
কি রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট?
গত মে মাসে ২০১০ সালের পর থেকে অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায় ভুক্তদের দেওয়া সব শংসাপত্র বাতিল করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। ক্ষমতায় আসার পর থেকে ৭৭টি পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়কে ওবিসির তালিকাভুক্ত করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে এক ধাক্কায় ৫ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র বাতিল হয়ে যায়। উচ্চ আদালতের সেই রায়ের বিরোধীতা করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য।
আগের শুনানিতে রাজ্যের হয়ে আইনজীবী কপিল সিব্বল শীর্ষ আদালতে বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গে মোট ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হয়েছে। বাংলায় মোট বাসিন্দার ২৮ শতাংশ সংখ্যালঘু। যার মধ্যে ২৭ শতাংশ মুসলিম। সিব্বল বলেন, রঙ্গনাথ কমিশন মুসলিমদের সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল। হাই কোর্ট অন্ধ্রপ্রদেশের একটি রায়কে ভিত্তি করে ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে এদিকে সেই রাজ্যেই ওই রায় স্থগিত রয়েছে। এরপরই জাস্টিস বিআর গাভাইয়ের পর্যবেক্ষণ, ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ পাওয়া উচিত নয়।
ওদিকে সিব্বল বলেন, পিছিয়ে পড়া অংশকে সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে মুসলিম ছাড়া অন্য সম্প্রদায়ের মানুষও রয়েছে। যদিও রাজ্যের তৈরি সংরক্ষণের তালিকা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলে জাস্টিস কেভি বিশ্বনাথনের প্রশ্ন, কোনো কমিশন গঠন করা হয়নি। এক্ষেত্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবে সংরক্ষণের তালিকা তৈরি করতে পারে? সিব্বল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় তালিকা তৈরি করেনি। তারা শ্রেণিবিন্যাস করেছে মাত্র। মূল মামলাকারীর পাল্টা সওয়াল ওবিসিদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে কোনও সমীক্ষা করা হয়নি বলে জানায় কলকাতা হাইকোর্ট। কোনো তথ্য ছাড়া কোনো কমিশন গঠন না করেই ওবিসি সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাতের ঘুম উড়ল ডাক্তারদের! প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে কড়াকড়ি! নয়া নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য দফতর
সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, হাই কোর্ট বলেছে শ্রেণিবিন্যাস করে রাজ্য বিধানসভায় সেই তথ্য পেশ করুক। রাজ্য নিজের ক্ষমতায় তা করতে পারবে না? হাই কোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হলেও রাজ্যের আবেদনে সায় দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। যার কারণে নিজেদের ‘ওবিসি সার্টিফিকেট’ ব্যবহার করতে পারছেন না বহু মানুষ। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আপাতত এই মামলায় কোনও নির্দেশ তারা দেবে না। মামলার পরবর্তী শুনানির দিকে তাকিয়ে সকলে।