মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের খাতা দেখায় ভূরি ভূরি ভুল! কেন এমন হচ্ছে? এবার বিরাট পদক্ষেপ পর্ষদের

   

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক যে কোনও পড়ুয়ার জীবনের প্রথম দুই বড় পরীক্ষা হিসেবে গন্য করা হয়। তবে অনেক সময় এই পরীক্ষাগুলির রেজাল্ট দেখে পরীক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট হতে পারেন না। যে কারণে অনেকে আবার রিভিউ বা স্ক্রুটিনিতে দেন। এরপর দেখা যায়, বহু পড়ুয়ার প্রাপ্ত নম্বর বেড়ে গিয়েছে। এবারও এমনটা দেখা গিয়েছে। তাই এবার এই নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের (WBBSE) সভাপতিও।

চলতি বছর মাধ্যমিকের (Madhyamik Pariksha) ফলাফল প্রকাশের পর বহু ছাত্রছাত্রী রিভিউ-তে দিয়েছিলেন। এবার তাতে সর্বাধিক ২২ নম্বর বেড়েছিল। অন্যদিকে উচ্চমাধ্যমিকের (Higher Secondary Examination) ক্ষেত্রে আবার এই প্রথম সরাসরি অনলাইন পোর্টালে নম্বর আপলোড করতে হয়েছে পরীক্ষকদের। তা করতে গিয়ে অনেকে সমস্যার মুখে পড়েছেন। উচ্চমাধ্যমিকে বাড়তি ফি-র পরিবর্তে তৎকাল পিপিআর ও পিপিএস চালুকরা হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের ২৫-৩০ নম্বর করে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এই মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

এদিকে উচ্চ মাধ্যমিকের পর পড়ুয়ারা কলেজে ভর্তি হন। চলতি বছর দেখা গিয়েছে, কলেজে ভর্তি হয়ে যাওয়ার পর অনেক পড়ুয়ার নম্বর বেড়েছে। তা নিয়েও অনেকের মনে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কারণ আগে থেকে যদি নম্বর বাড়তো তাহলে তাঁরা আরও ভালো কলেজে সুযোগ পেতে পারতেন, এমনটা মনে করছেন অনেকে।

আরও পড়ুনঃ বদলে গেল স্বাস্থ্যসাথীর এই নিয়ম! বিলে অনিয়ম ঠেকাতে এবার কড়া পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের

এই প্রসঙ্গে স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ (WBCHSE) এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বেশ কিছু সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে বর্তমানে যথাক্রমে ৫৫,০০০ এবং ৪৬,০০০ পরীক্ষক রয়েছেন। তাই তাঁদের ওপর একটা চাপ রয়েছে। এই চাপের পরিস্থিতিতে যদি তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে বহু পরীক্ষক খাতা দেখতে চাইবেন না বলেও অনুমান করা হচ্ছে।

এছাড়া মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে খাতা যখন দেখতে হয়, সেই সময় একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার খাতা দেখার ব্যাপারটাও থাকে। স্কুলশিক্ষা দফতরের তরফ থেকে পরীক্ষকদের ওপর থাকা এই ‘চাপে’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষকরা যদি রিভিউ ও স্ক্রুটিনিতে সার্বিকভাবে দৃষ্টিপাত না করেন তাহলে সেখানেও পড়ুয়াদের নম্বর বৃদ্ধির সুযোগ থাকবে না। সব মিলিয়ে, শিক্ষার্থীদের কথাই সবার আগে ভাবা হয়। সেটা যাতে শুধরে নেওয়া যায় সেই বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।

west bengal madhyamik exams 167706765916x9

এই বিষয়ে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা ভুল সংশোধনের জন্য অঞ্চলভিত্তিক প্রধান পরীক্ষকদের সঙ্গে শীঘ্রই বৈঠক করব। কেন এত ভুল হচ্ছে? তাঁদের থেকে সেই উত্তর চাওয়া হবে’। অন্যদিকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নির্ভুল করতে এবার পর্ষদের তরফ থেকে পরীক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক মডেল অ্যান্সারস্ক্রিপ্ট আগেই পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গেই ভুল থাকা খাতার পরীক্ষক, স্ক্রুটিনিয়ার এবং প্রধান পরীক্ষকদেরও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে’।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পর সাংবাদিকতা শুরু। বিগত প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর