বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে ভারত (India) এবং মলদ্বীপের (Maldives) মধ্যে সম্পর্ক বিভিন্ন কারণবশত প্রভাবিত হয়েছে। মূলত, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ মুইজ্জু (Mohamed Muizzu) দ্বীপরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর তাঁর বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং মন্তব্য রীতিমতো বিতর্কের আবহ তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, তিনি “ভারতবিরোধী” এবং “চিনপন্থী” হিসেবেও পরিচিত। এমতাবস্থায়, মুইজ্জুর এহেন কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর নিজের দেশের প্রাক্তন মন্ত্রীরাই তাঁর সমালোচনা করেছেন। সম্প্রতি মলদ্বীপের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী আবদুল্লাহ শাহিদ মুইজ্জুর বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন যে, তিনি মলদ্বীপে “হাজার হাজার ভারতীয় সেনা” রয়েছে বলে মিথ্যে দাবি করেছেন।
তবে, এবার মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মারিয়া দিদি গত শনিবার বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ মুইজ্জুকে “Immature” বলে অভিহিত করেছেন এবং তিনি বলেছেন যে তাঁর কাজ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে বাধাগ্রস্ত করবে না। এর পাশাপাশি, তিনি আরও কিছু বিষয়ে তাঁর মতামত জানান। মারিয়া বলেন, “মলদ্বীপ ভুল কারণে ভারতে বিখ্যাত হয়েছে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে, আমরা সেরকম মানুষ নই। আমরা বিদেশিদের আমাদের দেশে বেড়াতে আসার বিষয়টি পছন্দ করি এবং আমরা আপনাদের সবাইকে মলদ্বীপে স্বাগত জানাই।” উল্লেখ্য যে, দিদি ফার্স্টপোস্ট ডিফেন্স সামিট ২০২৪-এ তাঁর এহেন মতামত উপস্থাপিত করেন।
“২৫ বছর আগে, মলদ্বীপকে মানচিত্রে খুঁজে পাওয়া যায়নি”: এদিকে, দ্বীপরাষ্ট্র সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে দিদি জানান, “২৫ বছর আগে মলদ্বীপকে মানচিত্রে খুঁজেও পাওয়া যায় নি। যদিও এটি প্রায় ৫৪,০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে। যা প্রায় ফ্রান্সের আয়তনের মতো” তিনি আরও বলেন, “যেকোনো কিছুতেই আমরা ভারতের কাছ থেকে সবার প্রথমে সাড়া পেয়েছি। ১৯৮৮ সালে আমরা ভারতের কাছ থেকে ক্যাকটাস অপারেশনে সাহায্য পেয়েছি। যেখানে একদল সন্ত্রাসবাদী আমাদের কাছ থেকে দেশকে কেড়ে নিতে চেয়েছিল।”
আরও পড়ুন: রেললাইনে পড়ে আছে ট্রাক! লাইন বরাবর দৌড়ে দাঁড় করালেন ট্রেন, বৃদ্ধ দম্পতির তৎপরতায় এড়ানো গেল বড় বিপদ
তিনি জানান, “এছাড়াও, ম্যালে জল সঙ্কট থেকে শুরু করে করোনার সময়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের চিনের উহান থেকে নিয়ে আসতে ভারতীয় সেনার কাছ থেকে আমরা সাহায্য পেয়েছি। পাশাপাশি ভারত থেকে আমরা খাদ্য এবং ভ্যাকসিন পেয়েছি।” এছাড়াও দিদি বলেন, “এশিয়ান সুনামির মতো, যখন আমাদের অসুবিধা হয়েছিল, তখনও ভারত সাহায্য করেছে। সুনামি সমুদ্রের তলদেশকেও বদলে দিয়েছে এবং অনেক দ্বীপ অদৃশ্য হয়ে গেছে। পাশাপাশি, কিছু নতুন দ্বীপ আবির্ভূত হয়েছে। তাই, হাইড্রোগ্রাফিক চার্ট আপডেট করা প্রয়োজন।”
আরও পড়ুন: “ভারতীয় সেনার প্রসঙ্গে মিথ্যে বলেছেন মুইজ্জু”, এবার মলদ্বীপের প্রাক্তন মন্ত্রী ফাঁস করলেন আসল সত্য
তাঁর মতে, “আপনারা জানেন আমাদের আন্তর্জাতিক বিশ্বের, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশ হতে হবে….আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যাতে আমরা এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারি এবং এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে, ভারত মহাসাগর সংঘাতমুক্ত আছে। এই কারণেই যখন আমাদের সরকার ক্ষমতায় ছিল তখন আমরা দেখেছিলাম যে আমাদের প্রতিবেশী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অন্যান্যদের সাথে আমাদের সবসময় ভালো সম্পর্ক ছিল। আমরা এই অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখতে পেরেছি এবং আমরা আশা করি যে এখনও বিষয়গুলি সেইরকম হবে।”