বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমেরিকা বরাবরই ভারতকে রাশিয়ার সমালোচনা করার জন্য চাপ দিয়ে আসছে। এছাড়াও, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে আমেরিকা আশা করেছিল যে, আন্তর্জাতিক ফোরামে ভারত রাশিয়ার বিরুদ্ধে থাকবে। কিন্তু ভারত এখনও পর্যন্ত এই ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান বজায় রেখেছে। পাশাপাশি, রাশিয়াকে সরাসরি কিছু না বলে ভারত শান্তির আবেদনও জানিয়েছে।
এমতাবস্থায়, ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান সাংসদ রো খান্না জানিয়েছেন যে, ভারতকে অবশ্যই এখন ইউক্রেনে চলা রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করা উচিত। মার্কিন সাংসদ আরও বলেছেন যে, ভারতের এখন রাশিয়া বা চিন থেকে তেল কেনাও উচিত নয়। তিনি বলেন, এখন ভারতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ে এসেছে যে তারা কোন দিকে থাকতে চায়।
মার্কিন সংসদের নিম্নকক্ষ, হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ সিলিকন ভ্যালির প্রতিনিধিত্বকারী রো খান্না বরাবরই রাশিয়ার বিষয়ে ভারতের বর্তমান নীতির সমালোচনা করেছেন। এই প্রসঙ্গে ফক্স নিউজের সাথে একটি সাক্ষাৎকারের সময়ে, কঠোর সুরে তিনি জানিয়েছিলেন, “আমার ভারত সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা আছে এবং আমি মনে করি ভারতের এখন পুতিনের নিন্দা করা উচিত। এছাড়াও, ভারতের রাশিয়া বা চিন থেকে তেল নেওয়াও উচিত নয়। পুতিনকে বিচ্ছিন্ন করতে আমাদের অবশ্যই বিশ্বকে একত্র করতে হবে।”
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “প্রথমত, ভারতের উচিত জাতিসংঘে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য পুতিনের নিন্দা করা এবং দ্বিতীয়ত, ভারত এখন বেছে নিক সে কোন দিকে যেতে চায়।” এছাড়াও, চিনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চিন যখন ভারতের প্রতি আগ্রাসন দেখিয়েছে, তখন আমেরিকা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। পুতিন সেখানে ছিলেন না। রাশিয়ার কাছ থেকে নয়, আমেরিকা থেকে অস্ত্র কেনার এটাই সময় ভারতের। আমাদের দেখতে হবে কিভাবে এই প্রক্রিয়াটিকে সহজ করা যায়। চিনকে নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের মিত্র হিসেবে ভারতকে দরকার।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক দিনগুলিতে বেশ কয়েকজন শীর্ষ মার্কিন সাংসদ ইউক্রেন সঙ্কট নিয়ে ভারতের অবস্থানের সমালোচনা করেছেন। যদিও, ভারত এখনও পর্যন্ত রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে তার নিরপেক্ষ ও স্বাধীন অবস্থান বজায় রেখেছে। এছাড়াও, ভারত জাতিসংঘে রাশিয়ার নিন্দা সংক্রান্ত সমস্ত প্রস্তাব থেকেও দূরে থেকেছে।
ভারত অবশ্য বলেছে যে, সমস্ত দেশকে জাতিসংঘের সনদের নীতিগুলি মেনে চলা উচিত। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক আইন এবং দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান জানাতে হবে। পাশাপাশি, কূটনীতির মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে মতপার্থক্য নিরসন করা উচিত বলেও মনে করেছে ভারত।
এমতাবস্থায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশের নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেছেন। এছাড়াও, ভারত যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে মানবিক সাহায্যও দিয়েছে। ইউক্রেন এবং এর আশেপাশের দেশগুলিতে ওষুধ, চিকিৎসার সরঞ্জাম, তাঁবু, জল রাখার ট্যাঙ্ক, সোলার ল্যাম্প ইত্যাদি পাঠানো হচ্ছে ভারতের পক্ষ থেকে।