বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পবিত্র ঈদের (Eid) দিন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ রেড রোডে (Red Road) নামাজ পড়বেন। এটাই চলে আসছে। তবে এবার এই নিয়েও শুরু রাজনৈতিক তরজা, হাজারো বিতর্ক। কী নিয়ে শুরু সেই বিতর্ক? রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের এক টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি ঘিরেই ঘটনার সূত্রপাত। বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে, রেড রোড এবং ময়দান এলাকা জুড়ে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য যাবতীয় বন্দোবস্ত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার (Mamata Government)। এই নিয়েই সমালোচনায় সরব বিরোধী গেরুয়া শিবির।
পূর্ত দফতরের সেই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পৃথকভাবে তিনটি কাজের জন্য মোট বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৬ লক্ষ টাকা। টাকার অংক দেখে সকলের রীতিমতো চোখ কপালে। প্রশ্ন উঠছে যে, কোনও একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ধর্মাচরণের জন্য সরকারের এই পদক্ষেপের অর্থ কী? পাশাপাশি রাজ্যের শুধুমাত্র একটি জায়গাতেই এই সুবন্দোবস্ত কেন? সেই নিয়েও শুরু হয়েছে চৰ্চা। এই ইস্যু গুলি নিয়েই এদিন মমতা সরকারকে কটাক্ষ করে এক টুইট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
PWD has floated a tender for constructing a Pandal at Red Road for Id Ul Fitar. Why not for all the Idgahs across WB? Are those Namazis less important?
Similarly from now on PWD should float tenders for constructing Pandals for the biggest festivals of WB; Durga Puja & Kali Puja. pic.twitter.com/6zwY9TqF4W— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) April 20, 2023
সেখানে তিনি বলেন, “সরকার তাহলে সব জায়গাতেই নামাজ পড়ার জন্য খরচের ব্যবস্থা করুক। আর শুধু একটি ধর্ম কেন, সব ধর্মের জন্যই সরকার এমন দরাজহস্ত হোক। এদিন টুইটের পাশাপাশি ফেসবুকেও এই নিয়ে এক লম্বা পোস্ট করেন বিরোধী দলনেতা। সেখানে তিনি লেখেন, “ঈদ উল ফিতরের জন্য রেড রোডে একটি প্যান্ডেল, স্টেজ ও অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণ করার জন্য PWD একটি দরপত্র আহ্বান করেছে। প্রশ্ন হল শুধুমাত্র রেড রোডে কেনো? এই দুর্বিষহ তাপ প্রবাহের আবহে রাজ্যের সমস্ত ঈদগাহে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে না কেন? অন্যান্য ঈদগাহে যারা নামাজ পড়বেন তাদের সাথে এইরূপ বৈমাত্রেয় সুলভ আচরণ কেন? নাকি মুখ্যমন্ত্রী রেড রোড যেতে পারেন বলে ওখানকার নামাজি দের গুরুত্ব বেশি আর অন্যান্য জায়গার নামাজিরা গুরুত্বহীন।”
এখানেই শেষ নয়, এরপর নন্দীগ্রামের বিধায়ক আরও লেখেন, “আশা করবো PWD ঈদের ক্ষেত্রে যে উদ্যোগ গ্রহণ করলো, একই ভাবে এখন থেকে পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড়ো উৎসব দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর প্যান্ডেল, মঞ্চ সহ অন্যান্য পরিকাঠামো যেমন আলো, মাইক, জেনারেটর ইত্যাদির জন্য একই ভাবে দরপত্র আহ্বান করবে।”
তার সংযোজন, “আমি রাজ্যের সমস্ত দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর আয়োজক কমিটি ও উদ্যোক্তাদের বলব আপনারা নিকটস্থ PWD দপ্তরে আবেদন করুন যাতে সংশ্লিষ্ট এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আপনাদের পুজোর প্যান্ডেল, মঞ্চ সহ অন্যান্য পরিকাঠামো আলো, মাইক, জেনারেটর ইত্যাদির ব্যবস্থা দরপত্র আহ্বান করে সরকারি খরচে করে দেন।” প্রসঙ্গত, যে রাজ্যে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বারংবার সরস্বতী পুজো বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে, এমনকি দুর্গাপুজোর বিসর্জনের জন্য আদালতের কাছে ছুটতে হয়, সেখানে ঈদের জন্য এই আড়ম্বরপূর্ণ ব্যবস্থাকে তৃণমূল সরকারের তোষণের রাজনীতি বলেও কটাক্ষ করছেন অনেকে।