বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাতারাতি মহাবিপর্যয় নেমে এসেছে রাজ্যের (West Bengal) হাজার হাজার শিক্ষক শিক্ষিকার জীবনে। গতকাল ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হওয়ার পর থেকেই চারিদিকে শিক্ষকদের হাহাকার। কিছুতেই বাঁধ মানছে না চোখের জল। ২০১৬ সালে মোটা টাকার বিনিময়ে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল কিছু অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীর নাম। দীর্ঘ শুনানি পর্বের শেষেও চাল থেকে কাঁকর আলাদা করা যায়নি। যার ফলে অযোগ্যদের সাথেই রাতারাতি চাকরিহারা হয়েছেন রাজ্যের হাজার-হাজার যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা।
রাজ্যে (West Bengal) এই স্কুলে একসাথে চাকরি গিয়েছে ৩৬ জন শিক্ষকের
সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশে এভাবেই চাকরি হারিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলীর জামতলা ভগবানচন্দ্র হাই স্কুলের একাধিক শিক্ষক। তাঁদের মধ্যেই অন্যতম ৩৫ বছরের অংক শিক্ষক মনোজ তাঁতী। অন্যান্য দিনের মতোই গতকালও স্কুলে এসেছিল তিনি। অংক পরীক্ষার গার্ড ছিল তাঁর। ডিউটির সময় ফোনেই জানতে পারেন তাঁর চাকরি বাতিলের খবর। তারপরেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: একধাক্কায় ২৫,৭৫২! বিশ্বের বৃহৎ চাকরিহারার তালিকায় বাংলা? ছাপিয়ে যাচ্ছে গুগল-ফেসবুককেও
ভগবানচন্দ্র হাই স্কুলে ওই অঙ্ক শিক্ষকের মতোই চাকরি গিয়েছে আরও ১০ জন শিক্ষকের। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, চাকরিহারা শিক্ষককের অধিকাংশই সায়েন্স গ্রূপের শিক্ষক। তাই একসাথে এতজন শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ায় স্কুল চালানোর ব্যাপারে একপ্রকার দিশেহারা হয়ে পড়েছেনতিনি। চাকরি চলে যাওয়ার পর এই দিন চোখে জল নিয়েই একরাশ হতাশার সাথে স্কুল ছেড়েছেন ওই স্কুলের ১১ জন শিক্ষক।
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে রাজ্যের (West Bengal) এমনই একাধিক সরকারি স্কুলের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের। মহাবিপর্যয় নেমে এসেছে মুর্শিদাবাদের অর্জুনপুর হাই স্কুলেও। এই স্কুলে মোট ৬০ জন শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু গতকাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে একসাথে চাকরি গিয়েছে ৩৬ জনের। এখন এই স্কুলে আর মাত্র ২৪ জন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন। একই অবস্থা মেদনীপুর টাউন স্কুলেও। ডিউটিতে এসে সুপ্রিম কোর্টের চাকরি বাতিলের রায়ের খবর জানতে পারেন এই স্কুলের দুই শিক্ষক। অন্যদিকে আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে মালদা শহরের বাল্য গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষিকা ও এক গ্রুপ ডি কর্মীরও ।