বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মাসের পর মাস ধরে ডিএ মামলা ঝুলে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এর আগে ১৩বার ডিএ (Dearness Allowance) মামলার শুনানি পিছিয়েছে সর্বোচ্চ আদালতে। এরপরে এই মামলার শুনানির সম্ভাব্য দিন রয়েছে আগামী বছর। ২০২৫ সালের ৭ জানুয়ারি। আরো মাস পর মামলা শুনানির জন্য ওঠার পর ফের পিছিয়ে যাবে না তো? মনে আশঙ্কাও রয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের (West Bengal State Government Employees)। আবার কিছু জিনিস নিয়ে সন্দীহানও তারা।
কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার দাবিতে বহুদিন থেকে আন্দোলন চালাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। তবে সুরাহা হয়নি। এখনও সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে রয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার মামলা। সম্প্রতি পুজো উপলক্ষে ডিএ মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বিজেপি নেতা সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন।
সেখানে গিয়ে সন্ময়বাবুকে সাক্ষাৎকারে মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এর আগে গত ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই ডিএ মামলায় ১৩তম শুনানি ছিল। এরপরে এই মামলার শুনানির যে সম্ভাব্য দিন সেটা হল ২০২৫ সালের ৭ জানুয়ারি। সাধারণত এই ‘সম্ভাব্য দিনেই’ মামলার শুনানি হয়।’ মামলায় ডিএ (Dearness Allowance) জট যাতে এবার অন্তত খোলে মা দুর্গার কাছে সেই প্রার্থনা করে মলয়বাবু বলেন, ‘৬ মাস পরে এই মামলার শুনানির তারিখ পড়েছে। মায়ের কাছে আমার প্রার্থনা ৭ জানুয়ারি যাতে মামলাটি অন্তত ওঠে। তাতে সুপ্রিম কোর্ট যা নির্দেশ দেবে আমরা মাথা পেতে নেবো। ”
এর আগে শেষবার যখন মামলার শুনানি ৬ মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল সেই সময় প্রশ্ন তুলে মলয়বাবু বলেছিলেন, ‘কেন এবারে মামলাটি ছ’মাস পিছিয়ে দেওয়া হল সেটা সুপ্রিম কোর্টের কাছে জানতে চাইব। সাধারণত, সুপ্রিম কোর্টে মামলা শোনার পরে সেটি ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হয়। ডিএ মামলায় এমন কী আছে যে এতগুলো মাসের জন্য শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হল?’
মলয়বাবু আরও বলেন, ‘যেখানে হাই কোর্ট ৪টে, ট্রাইবুনাল ২টো রায় দিয়েছে। সেই মামলায় এসএলপি করলে একদিনেই তো বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। ডিএ সাংবিধানিক অধিকার একথা উচ্চ আদালত রায় দিয়ে জানিয়েছিল। সরকার তো সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেনি। তাহলে এটা কি হচ্ছে? কেন হচ্ছে? সুপ্রিম কোর্ট যে জানে না, এমন নয়। তাই আমাদের সন্দেহ হয়।’ যদিও সেই সন্দেহ নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাননি তিনি।
এর আগে ডিএ মামলাটি উঠেছিল বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চে। শেষবার বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির ডিভিশন বেঞ্চে। পূর্বে যতবারই শুনানির দিন এসেছে ততবারই হতাশ হতে হয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের। প্রতিবারই কোনো না কোনও কারণে পিছিয়ে গিয়েছে শুনানি। অতীতে বহুবার সময়ের অভাবে ডিএ মামলার শুনানি হয়নি বা হলেও সামান্য সময়ের জন্যই হয়েছে। যা নিয়ে যথেষ্টই হতাশ রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা চলছে, সেটা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পঞ্চম বেতন কমিশনের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার জন্য। সেই ২০১৬ সাল থেকে সেই মামলা চলছে। ওদিকে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় ১৪ শতাংশ হারে ডিএ (Dearness Allowance) পাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ফের নিম্নচাপ! রাত পোহালেই ফের ঝড়-বৃষ্টির তোলপাড় দক্ষিণবঙ্গে: আবহাওয়ার আগাম খবর
২০২২ সালের নভেম্বর মাসে সরকারি কর্মচারীদের ডিএ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন (এসএলপি) দাখিল করেছিল বাংলার সরকার। ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালতে প্রথমবারের মতো ডিএ মামলাটি উঠেছিল। যদিও তারপর থেকে আর সুরাহা হয়নি। ঝুলে রয়েছে ডিএ মামলা। সাথেই ঝুলে সরকারি কর্মীদের ভাগ্যও।