বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সশরীরে উপস্থিত না থেকেই আদালতের মামলা চলাকালীন সাক্ষ্য দিতে পারবেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার বা পুলিশ কর্মীরা। বিচারাধীন বন্দিদের মতোই এবার পুলিশ অফিসার বা পুলিশ কর্মীদের জন্য ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষ্য দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে রাজ্য (West Bengal) পুলিশ। এই নতুন ব্যবস্থা চালু হলে সশরীরে আদালতে হাজির না থেকে নিজের ইউনিটে বসেই যে কোন ঘটনার সাক্ষ্য দিতে পারবেন পুলিশ অফিসার বা পুলিশ কর্মীরা। এই নতুন ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ই-সাক্ষ্য’। এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য ভবানী ভবনের তরফে রাজ্য পুলিশের সমস্ত থানার সঙ্গে আদালতের ভিডিয়ো সংযোগ করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে নবান্নে। সেখানে রাজ্যের বিভিন্ন আদালত-সহ ৬০০টি ইউনিটে এই ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য (West Bengal) পুলিশের জন্য বড় সিদ্ধান্ত ভবানী ভবনের
রাজ্য (West Bengal) পুলিশের কর্তারা কেন এই ‘ই-সাক্ষ্য’ চালু করতে চাইছেন? এ-প্রসঙ্গে পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে আদালতে হাজির হয়ে মামলার সাক্ষ্য দিতে পারেন না অনেক পুলিশ অফিসার বা পুলিশকর্মীরা। অনেক ক্ষেত্রে আবার সাক্ষ্য দিতে দূরের জেলা থেকে নির্দিষ্ট আদালতে আসতে হয় তাঁদের। এভাবে আসতে গিয়ে বিচারপর্বের একটা দিন নষ্ট হয়। এরফলে যেমন অনেক সময় নষ্ট হয়, বিচার প্রক্রিয়াও বিলম্বিত হয়। এই কারণেই পুলিশের শীর্ষকর্তারা চাইছেন ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষ্যদানের ব্যবস্থা চালু করে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে। তাঁদের মতে এর ফলে একদিকে যেমন সময় বাঁচবে, অন্যদিকে আর্থিক দিক দিয়েও লাভবান হবে রাজ্য প্রশাসন।
ভবানী ভবনের তরফে নবান্নে এই প্রস্তাব পাঠিয়ে বলা হয়েছে, এই সাক্ষ্য ব্যবস্থায় সবার আগে থানার একটি ঘরকে সাক্ষ্যদানের জন্য নির্দিষ্ট করতে হবে। ওই ঘরের সঙ্গে আদালতের ভিডিয়ো সংযোগ থাকবে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট মামলার সাক্ষী যে পুলিশ অফিসার বা কর্মী তাকে সনাক্ত করবেন ওই থানার আইসি বা ওসি। সাক্ষ্যদান চলাকালীন ওই ঘরে যাতে অন্য কেউ না থাকে তার জন্য পুরো ঘরকে সিসি ক্যামেরার আওত্তায় আনতে হবে।
আরও পড়ুন: রেকর্ড সংখ্যায় কমল স্কুলছুট! মাধ্যমিক শুরুর আগেই বিরাট চমক পুরুলিয়ায়
উল্লেখ্য সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুরের আদালত থেকে জেলে যাওয়ার পথে পুলিশ কর্মীদের গুলি করে পালিয়ে গিয়েছিল এক বিচারাধীন বন্দী। যদিও সে পুলিশের গুলিতে পরে মারা গিয়েছিল। ওই ঘটনার তদন্তে উঠে আসে আদালত চত্বরে বিচারাধীন বন্দিকে বন্দুক সরবরাহ করেছিল এক দুষ্কৃতী। ওই ঘটনার পরে বিচারাধীন বন্দিদের আদালতে সশরীদের হাজির না করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পেশ করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আপাত গোটা রাজ্য (West Bengal) জুড়ে এই কাজ চলছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে বর্তমানে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রেই বিচারাধীন বন্দিদের আর আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। পরিবর্তে তাদের বিচারকের সামনে হাজির করানো হচ্ছে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। ১০০ শতাংশ বিচারাধীন বন্দিকেই যাতে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকের সামনে হাজির করানো যায়, আদালতের সঙ্গে সেই বিষয়েই আলোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের এক কর্তা।