বাংলাহান্ট ডেস্ক : ঘুণ ধরেছে বিজেপির সংগঠনে। যে কোনও মূহুর্তে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় তটস্থ দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে সুকান্ত মজুমদার সকলেই। দলের সাংগঠনিক অবস্থার যে রিপোর্ট দলের হাতে রয়েছে এই মুহুর্তে, তার তথ্যের উপর ভিত্তি করে আপাতত আর কোনও বিক্ষোভ, কর্মসূচি কিংবা জেলাস্তরীয় সম্মুখ যুদ্ধে ভুলেও পা দিতে চায় না রাজ্যের গেরুয়া শিবির। এই কাঠামো মেরামত করে তাতে শীঘ্রই ঠেকা না দিলে যে ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে ভরাডুবি নিশ্চিত তা একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে রাজ্যের শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্বের কাছে।
দলের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার এই খবর সামনে আসতেই খানিক মেপে পা ফেলার পরিকল্পনা করছেন সুকান্ত-অমিতাভরা। কোনও বিরাট ইস্যু না এলে আগামী কয়েকমাস বড় কোনও আন্দোলনে নামতে রাজি নয় বিজেপি। আন্দোলনে নামলেও যে সেখানে কর্মীদের খুব একটা দেখা পাওয়া যাবে না তেমনটাই মত তাঁদের। আপাতত দলের কর্মী সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করতেই মন দিতে চায় গেরুয়া শিবির। এই কারণের কোমর বেঁধে মাঠে নেমে একেবারে বুনিয়াদি স্তর থেকেই খলনলচে বদলের পথে হাঁটছেন দিলীপ ঘোষ থেকেই সুকান্ত মজুমদারের মতন শীর্ষ নেতৃত্ব।
পুরসভা ভোটে অধিকাংশ বুথেই এজেন্ট দিতে পারেনি বিজেপি। ২০২১ এর বিধানসভার ফলাফলের পর যে দলের অধিকাংশ কর্মীই নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন তা বলাই বাহুল্য। দল ছেড়েছেন অগণিত কর্মী। যাঁরা টিকে রয়েছেন তাঁদের কারওই মাঠে নেমে লড়ার ইচ্ছে মনোবল কোনোটিই নেই। এর ফলের জেলাস্তরে বিপুল ধস নেমেছে পুর ভোটের ফলাফলে। এই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে বিজেপির কাছে এই কথা স্পষ্ট যে মোদীর মুখের উপর ভরসা করে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে লড়তে গেলে হাটে হাঁড়ি ভাঙবে দলের।
এই অবস্থা বুঝেই নড়েচড়ে বসে মাঠে নেমেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সুকান্ত মজুমদার স্বীকার করেছেন যে, ‘ ২০১৪ এর পর থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত রাজ্যে দ্রুত বেড়েছে বিজেপি। কিন্তু সংগঠন শক্ত করা সম্ভব হয়নি ‘ তাই এবার দলের তৃণমূল স্তরকেই টার্গেট বানিয়ে কোমর বেঁধেছেন তাঁরা। দলের এক রাজ্যস্তরের নেতার দাবি, ‘এভাবে চললে ২০১৯ এর লোকসভার ১৮টি আসন ধরে রাখা তো দূর তার অর্ধেকও দখল করা সম্ভব হবে না লোকসভা নির্বাচনে।’
সাংগঠনিক দূর্বলতা, গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব, সবে মিলে নাজেহাল রাজ্য বিজেপি। কিন্তু শেষ লগ্নে এসে এই বোধহয় কতখানি কাজে লাগবে দলের? লোকসভা ভোটের আগে মাঠে নেমেও কতখানি চাঙ্গা করা যাবে পদ্ম শিবিরকে? সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে এখনও।