বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিজেপির অন্দরে ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। গত এপ্রিল মাসে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে হাসিমুখে বৈঠক করার পর বঙ্গ বিজেপির (BJP) একাধিক নেতা দিলীপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। পাল্টা চুপ থাকেননি মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদও। এবার যত সময় এগোচ্ছে ততই যেন চওড়া হচ্ছে বঙ্গ বিজেপি ও দিলীপের মধ্যেকার ফাটল। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় তাঁকে ডাকা হয়নি। রাজ্য বিজেপির নানান কর্মসূচিতেও তাঁর অনুপস্থিতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই আবহে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি শেষমেশ তৃণমূলেই যোগদান করবেন পদ্ম শিবিরের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি?
প্রশ্নের মুখে দিলীপের (Dilip Ghosh) রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ!
দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে মমতার সঙ্গে হাসিমুখে বৈঠকের পর দিলীপের দলবদলের জল্পনা তীব্র হয়েছিল। যদিও সেই চর্চায় ইতি টেনেছিলেন পদ্ম নেতা নিজে। স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ‘তৃণমূলের সঙ্গে আমার স্ট্যান্ডার্ড মেলে না’। একইসঙ্গে বলেছিলেন, ‘দিলীপ ঘোষকে দেখে যারা বিজেপি করতে এসেছেন, তাঁরা জানেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এটা জানেন, দিলীপ কোনোদিন তৃণমূলে যাবেন না’।
দিলীপ জোর গলায় এই মন্তব্য করলেও, গত এক মাসে জল অনেক দূর গড়িয়েছে। দিলীপের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির মধ্যেকার দূরত্ব আরও পরিস্ফুট হয়েছে। খাতায় কলমে এখনও দলে থাকলেও কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে সেভাবে দেখা যায় না। এমনকি মোদী-শাহের সভাতেও তিনি ডাক পাননি। ফলে স্বভাবতই ফের একবার তাঁর তৃণমূলে (Trinamool Congress) যোগদানের জল্পনা মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুনঃ রাজ্যবাসীর জন্য সুখবর! রথযাত্রার আগেই বাড়ি পৌঁছবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ, কী কী থাকবে?
সম্প্রতি আবার জানা যায়, বিজেপির আদি নেতাদের একাংশ নাকি আবার দিলীপকে সক্রিয় করার চেষ্টায় নেমেছেন। দলে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বঙ্গ বিজেপিতে দিলীপ নিজের পুরনো ‘স্থান’ ফিরে পাবেন কিনা তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে। মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারস্থ হওয়া নেতাদের সংখ্যা কতটা সেটাও দেখার বিষয়।
এমনিতেই রাজনীতিতে চিরস্থায়ী কিছু নয়। বহু হেভিওয়েট রাজনীতিকের দলবদলের সাক্ষী থেকেছে বাংলা। দিলীপ যেভাবে বঙ্গ বিজেপিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন, তাতে তিনিও এই পথে হাঁটেন কিনা সেই প্রশ্ন দেখা দিতে শুরু করেছে।
অন্যদিকে আবার বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে দলবদলের পালা। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন জন বার্লা, সম্প্রতি কংগ্রেসের ‘হাত’ ছেড়ে শাসকদলে নাম লেখান শঙ্কর মালাকার। ভোটের দামামা বাজার আগে দিলীপও (Dilip Ghosh) কি ‘ফুলবদল’ করবেন নাকি কোণঠাসা হয়ে গেলেও বিজেপিতেই পড়ে থাকবেন? যথাযথ সময়েই হয়তো মিলবে এর উত্তর।