বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এই বয়সে অবসর জীবন উপভোগ করেন বেশিরভাগ মানুষ। তবে তিনি ব্যতিক্রম। এখনও রোজ ১০,০০০ পা হাঁটেন। রাস্তা হোক বা ট্রেডমিল, যখন যেমন সুযোগ মেলে। তবে অভ্যাসে কোনও বদল আনেননি। সাঁওতাল রমণীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচ করা হোক বা জেলায় জেলায় ঘুরে সভা করা, এখনও সবটাই অনায়াসে করতে পারেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
সম্প্রতি নিজের ব্যস্ত শিডিউল থেকে সময় বের করে উপস্থিত হয়েছিলেন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’এর (Didi No 1) মঞ্চে। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় সঞ্চালিত শো-য়ে বিশেষ অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বয়স নিয়ে কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। বর্তমানে মমতার বয়স ৬৯ বছর। তবে তিনি অন্তত সেটা মানেন না! মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, সংখ্যা দিয়ে বয়সের হিসেব করায় আপত্তি আছে তাঁর। কারণ আমরা জীবনের বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটাই। তিনি বলেন, ‘কারোর বয়স ৫০ বছর হলে আমি মনে করি তাঁর বয়স ২৫’।
ঘটনাচক্রে তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো যখন একথা বলছেন, তখন দলের অন্দরে নতুন করে শুরু হয়েছে নবীন-প্রবীণ বিতর্ক। তৃণমূলের (Trinamool Congress) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জনপ্রিয় এক সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘বয়স হলে কর্মক্ষমতা কমে যায় বলে আমি মনে করি। আমার বয়স কম বলে নবজোয়ার যাত্রায় প্রায় দু’মাস রাস্তায় থাকতে পেরেছি। বয়স হয়ে গেলে কি সেটা পারতাম’। একইসঙ্গে অভিষেক (Abhishek Banerjee) স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নরেন্দ্র মোদীর মতো নেতারা বয়সের হিসেবের ঊর্ধ্বে।
প্রসঙ্গত, গত বছর শেষের দিকে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের একটি অধিবেশনের পর দলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ বিতর্ক নতুন করে মাথাচাড়া দিতে শুরু করে। সেই সময় কুণাল ঘোষ প্রকাশ্যে এই নিয়ে মুখ খোলেন। সম্প্রতি তিনি দলের প্রবীণ নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন। সেই ঘটনাকেও অনেকে ‘নবীন প্রবীণ বিতর্ক’এর আলোতেই ফেলতে চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য যখন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’এর শ্যুটিংয়ে গিয়েছিলেন তখন কুণাল-সুদীপ বিতর্ক শুরু হয়নি। তবে নবীন প্রবীণ বিতর্ক ছিল।
আরও পড়ুনঃ তাপস রায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের মাঝেই ‘প্রেমপত্র’ পেলেন কুণাল! কী লেখা আছে জানলে চমকে উঠবেন
রচনার শোয়ে পরিবারের কথা বলতে গিয়ে বয়সের প্রসঙ্গ টেনেছিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ছেলেবেলাটা হারিয়ে গিয়েছে। আমাদের অনেক বড় পরিবার। আমিই সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতাম। এখন অভিষেক রাখে। সবার বয়স হয়ে গিয়েছে’। এরপরেই বয়সকে সংখ্যার হিসেবে বাঁধার বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘আমায় অনেকে বয়স নিয়ে জিজ্ঞেস করেন। বয়স আবার কী? যতক্ষণ কর্মক্ষমতা ততক্ষণ সব ঠিক’। উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু অভিষেকের কথার বিরোধিতা করেননি। তবে অভিষেকের কথায় আঙ্গিকেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, বয়স নয়, বরং কর্মক্ষমতাতেই বিশ্বাসী তিনি।