বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) পর থেকেই চিকিৎসক সমাজের সঙ্গে সরকারের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়ায় সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সেই সঙ্গেই প্রকাশ্যে আসে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেন জুনিয়র চিকিৎসকদের (Doctors) একাংশ। পরবর্তীতে স্যালাইন কাণ্ডের পর নবান্নের বৈঠক থেকে চিকিৎসকদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সাসপেন্ড করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ১২ জন চিকিৎসককে। যা নিয়ে ফুঁসে উঠেছিলেন ডাক্তারদের একাংশ। এই আবহে নেওয়া হল বড় উদ্যোগ।
চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)
রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির চিকিৎসক ব্যবস্থা নিয়ে ডাক্তারদের কী কী অভাব-অভিযোগ রয়েছে তা শুনতে উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন মমতা। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ওই বৈঠকের আয়োজন করা হবে। ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
জানা যাচ্ছে, এই বৈঠকে সিনিয়র ও জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী। কর্মসূচির নাম রাখা হয়েছে ‘চিকিৎসার অপর নাম সেবা’। ইতিমধ্যেই মমতার (Mamata Banerjee) এই উদ্যোগ নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুনঃ পোড়া বস্তি দেখতে ৪৫ হাজারের গেঞ্জি পরে হাজির ফিরহাদ! বিধায়কের বেতন কত জানেন?
মূলত আরজি কর কাণ্ডের পর থেকেই চিকিৎসক সমাজের সঙ্গে রাজ্য সরকারের (Government of West Bengal) একটি দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। পরবর্তীতে স্যালাইন কাণ্ডে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করে রাজ্য। একইসঙ্গে ৮ ঘণ্টা ডিউটির কথা স্মরণ করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, কর্তব্যে গাফিলতি করলে কাউকে ছাড়া হবে না। ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার এই ঘটনায় রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ছিলেন চিকিৎসকদের একাংশ। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে। হাসপাতালের পরিকাঠামো যদি ঠিক না থাকে, তাহলে কীভাবে কাজ করব? প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা।
পাল্টা শাসকদলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, পরিকাঠামো থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারের বদনাম করার জন্য পরিকল্পিতভাবে হাসপাতালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে। আর সেই সুযোগ নিচ্ছে বিরোধীরা। এমতাবস্থায় বছরের শুরুতেই ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশকে নিয়ে ‘প্রোগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশন’ নামক একটি সংগঠন তৈরি করে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)।
এবার সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ডাক্তারদের কী কী অভাব-অভিযোগ রয়েছে সেটা শুনতে তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত হতে চলেছে এই বৈঠক। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, কড়া শাস্তির হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকদের অভাব-অভিযোগ শুনতে বৈঠকে বসছেন দক্ষ রাজনীতিক মমতা। এর ফলে বিরোধীদের আন্দোলনের পরিসর অনেকখানি কমে গেল।