বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তিন বছর অতিক্রান্ত। তবে জুটেছে খালি হতাশা। ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে বাংলার সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ সংক্রান্ত মামলা (DA Case) চলছে সুপ্রিম কোর্টে। তারপর থেকে কোনো রায় না মিললেও মিলেছে একাধিক তারিখ। সবমিলিয়ে ১৪ বার সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার (Dearness Allowance) শুনানি পিছিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই হতাশায় ভেঙে পড়েছেন সরকারি কর্মীরা।
ডিএ মামলা পিছিয়ে যেতে সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্ট করে ‘মন খারাপের কথা’ লিখেছেন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়। সম্প্রতি এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘দিল্লি থেকে ফেরার পথে-০৮.০১.২৫ আমরা এখন ট্রেনে, ট্রেন প্রায় নয় ঘন্টা লেটে রান করছে। মনটা ভারি বিষাদগ্রস্থ। কারন ডি.এ মামলায় ১৪ তম শুনানিতেও মহামান্য বিচারপতিদের সেই একই অভয়বাণী আজ সময় নেই, তাই আগামী মার্চ মাসে মামলা শোনা হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই ডিভিশন বেঞ্চের সিনিয়ার বিচারপতি শ্রী ঋষিকেশ রায় আগামী ৩১ শে জানুয়ারি অবসর গ্রহন করবেন। (মার্চে তিনি কি ভাবে মামলা শুনবেন?) সেক্ষেত্রে আবারও নতুন বেঞ্চ!’
প্রশ্ন তুলে দিয়ে মলয়বাবু লেখেন, ‘বিচার কি হলো, তার থেকেও বড় কথা বিচার সম্পর্কে মানুষ কি ভাবলেন? বিচার ব্যবস্থার উপর যদি মানুষের আস্থাই চলে যায়, তাহলে গণতন্ত্রে এমন বিচার ব্যবস্থা অপ্রাসঙ্গিক। মানুষ আজ বিশ্বাস করছেন পশ্চিমবঙ্গের সরকারকে সুরক্ষা দিতে ডি.এ মামলা সুপ্রিম শুনানি কখনই হবে না। হয়তো কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজ্যসভার সাংসদ হবেন বা ‘অফিস অফ প্রফিট’ উপহার হিসেবে পাবেন।’
তার কোথায়, ‘মানুষের ভাবনার উপর পৃথিবীর কোনও সুপ্রিমকোর্ট বেড়ি পরাতে পারে না। তাই বিচার ব্যবস্থার উপর মানুষের আস্থা রক্ষার স্বার্থেই আর ‘তারিখ-পে- তারিখ’ নয়, অবিলম্বে ডিএ মামলার রায় ঘোষনার প্রয়োজন। মাননীয় বিচারপতিদেরও ভেবে দেখা প্রয়োজন, ‘তারিখ পে তারিখ’ সংস্কৃতিতে তাদের ব্যক্তিগত বিশ্বাসযোগ্যতার সম্পর্কে জনমনে সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে না তো?’
আরও পড়ুন: পৌষ সংক্রান্তিতেই আবহাওয়ার বড় বদল! বৃষ্টির দাপট সপ্তাহান্তে, এক নজরে আবহাওয়ার খবর
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ষষ্ঠ পে কমিশনের আওতায় ১৪ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন সরকারি কর্মীরা। ২০২২ সালের ২০ মে ডিএ মামলা হাইকোর্টে উঠলে আদালতের নির্দেশ ছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। তবে সেবার জয় পেয়েও মেলেনি বকেয়া।
হাইকোর্টের ডিএ (Dearness Allowance) রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য। যদিও তা খারিজ হয়ে যায়। এরই মাঝে তিনটি রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার দায়ের করে। সেই মামলার মধ্যেই পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য।
গত ২০২২ সালের ২০ মে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। এরপরই রাজ্য সরকার স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করে। সেই প্রেক্ষিতেই মামলা শুরু হয়। তারপর থেকে আরও একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা আদালতে উঠলেও বারে বারে শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। প্রতিবারই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে এ রাজ্যের সরকারি কর্মীদের।