বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া জেলবন্দীদের সমস্ত রকম আইনি সাহায্য দিতে এবার বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) রাজ্য সরকার। তার জন্য এবার শুধুমাত্র রাজ্যের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার নয় জেলা ও মহাকুমা জেলেও আরও বেশি মাত্রায় লিগ্যাল এইড ক্যাম্প খোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এছাড়াও বিভিন্ন সংশোধনাগারে থাকা লিগাল আউটলেটগুলিও আরও জোরদার করা হচ্ছে। ওই সমস্ত বন্দিরা যাতে তাদের মামলার খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে সরাসরি সেখানে অভিযোগ জানাতে পারেন তার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এরফলে বিনা বিচারে কোন বন্দী আর দীর্ঘদিন জেলের মধ্যে আটকে থাকবে না। কারা দপ্তর সূত্রে খবর, এবার এই কারণেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
জেলে দুঃস্থ বন্দিদের আইনি সহায়তা দিতে উদ্যোগী রাজ্য (West Bengal)
জানা যাচ্ছে, উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের প্রত্যেক জেলে মাঝে মধ্যে লিগাল এইডের কর্তারা বন্দিদের সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে আসেন। সেখানে তাদের স্বাস্থ্য, খাবারের গুণগত অবস্থা খতিয়ে দেখে সেই মর্মে রিপোর্টও দিয়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে। এবার সেই কাজ আরও বেশি মাত্রায় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বন্দীদের সমস্ত মামলার যাবতীয় খুঁটিনাটি সম্পর্কেও খোঁজখবর নেওয়া হবে।
অনেক বন্দী আছে যাদের বাড়ির লোকের মামলা চালানোর মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই। লিগ্যাল এইড থেকে তাদের সবরকমভাবে সাহায্য করা হবে। এরফলে আদালতে মামলা চলাকালীন ওই সমস্ত বন্দীরা আত্মপক্ষ সমর্থন করার সমস্ত সুযোগ পাবেন। কারা দপ্তরের এক অফিসার জানিয়েছেন বিভিন্ন জেলে যে সমস্ত লিগ্যাল এইডের ক্যাম্প চলে সেখানে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দিদের মধ্যে উৎসাহিতদেরও কাজে লাগানো হবে। অর্থাৎ বন্দীরা যাতে বিচার থেকে কোনভাবেই বঞ্চিত না হন সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাতে মাত্র এক মাস! উচ্চ-মাধ্যমিক শুরুর আগেই কড়া পদক্ষেপ সংসদের, বিপাকে পড়বে অনেকে!
রাজ্য (West Bengal) আইনি সহায়তা কেন্দ্র সূত্রের খবর রাজ্যের প্রতিটি জেলায় তারা আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য বিনামূল্যে আইনি সচেতনতার পাঠ দিতে মাঝে মধ্যেই আইনি শিবিরের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এবার বিভিন্ন জেলে লিগ্যাল এইড ক্যাম্প থেকেও আইনের সচেতনতা পাঠ দেওয়া হবে বন্দীদের।
ব্যাঙ্কশাল আদালতের আইনজীবী সংগঠনের কর্তা তথা সরকারি কৌঁসুলি প্রবীর মুখোপাধ্যায় এপ্রসঙ্গে বলেছেন, ‘কোন বন্দির যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয় সেই বিষয়টি দেখা অত্যন্ত জরুরী। তাই সেক্ষেত্রে সরকারি এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়।’ সরকারি কৌঁসুলি অসীম কুমার জানিয়েছেন, ‘অনেক বন্দিই মামলার বিষয়ে অবগত নন। সেক্ষেত্রে জেলে লিগ্যাল আউটলেট থেকে যদি তারা মামলার বিষয় সম্পর্কে অবগত থাকে, তাহলে তাদের আর সমস্যায় পড়তে হবে না। রাজ্য (West Bengal) সরকার এই বিষয়ে আরও বেশি মাত্রায় এগিয়ে আসায় বন্দিরাও উপকৃত হবে।’