বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যজুড়ে প্রায় ৩৭ টি সরকারি প্রকল্প চালাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। এই সমস্ত সরকারি প্রকল্পের পিছনে প্রত্যেক বছর খরচ হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। যা দেখে বলা হচ্ছে দিনে দিনে রাজ্যের (Nabanna) আয়ের থেকে খরচের বহর বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের অর্থ দপ্তর যখন বাজে খরচ কমাতে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে ঠিক তখনই রাজস্ব সংগ্রহের উপর বিশেষ নজর দিচ্ছে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জেলাগুলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বেআইনি বালি-পাথর খাদান,ইঁটভাটা গুলি থেকে রাজস্ব সংগ্রহের উপরেও।
জেলায় জেলায় জারি নবান্নের (Nabanna) কড়া নির্দেশ
জানা যাচ্ছে, রাজ্যের জেলাগুলিকে চলতি আর্থিক বছরে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর ১১৬০ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা রাজস্ব সংঘের টার্গেট বেঁধে দিয়েছে। জানা যাচ্ছে রাজ্যের মধ্যে ভূমি রাজস্ব দফতর রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং বীরভূমের ওপর। এখানেই রয়েছে পাথর ও বালি খাদান।
ইতিপূর্বে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বেআইনি খাদান বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন একাধিকবার। তিনি প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন এর সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের একাংশ জড়িত তাই প্রশাসনকে চাপে রাখতেই বেআইনি খাদান বন্ধে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলেই দাবি করছে নবান্ন (Nabanna)।
ভূমি ও রাজস্ব দপ্তর একটি নির্দিষ্ট তালিকা তৈরী করেছে। সেই তালিকায় পূর্ব বর্ধমান কে ২১৩ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা এবং বীরভূমকে ২৬৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা এবং পশ্চিম বর্ধমানকে ১৩১ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা রাজস্ব দেওয়ার টার্গেট স্থির করে দেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়াকে সাড়ে ৬০ কোটি টাকার রাজস্ব সংগ্রহের টার্গেট দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় বালি খাদান না থাকলেও রয়েছে অনেক বেআইনি ইঁট ভাটা।
আরও পড়ুন: বিরাট পদক্ষেপ নবান্নের! এদের আবাস প্রকল্পের টাকা ফিরিয়ে নিচ্ছে রাজ্য, হৈচৈ শুরু
অনেক জায়গায় চাষের জমিকে ভেরিতে রূপান্তরিত করে চলছে মাটির ব্যবসা। এদের কাছ থেকে রাজ্য সরকার (Nabanna) কোন রয়ালিটি বা রাজস্ব পাচ্ছে না। তাই দক্ষিণ ২৪ পরগণাকে ৬৩ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা এবং উত্তর ২৪ পরগনাকে ৩৯ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকার রাজস্ব সংগ্রহ করার টার্গেট দেওয়া হয়েছে। একইভাবে ঝাড়গ্রামকে ৭৩ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা টাকা সংগ্রহের টার্গেট দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মুর্শিদাবাদকে ৩৭ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার রাজস্ব সংগ্রহের জন্য টার্গেট দেওয়া হয়েছে বলেই খবর।
জানা যাচ্ছে, শুধুমাত্র বালি-পাথর খাদান কিংবা ইঁট ভাটা নয়, দখল হওয়া রাজ্য সরকারি জমি উচ্ছেদ করেও দখলদারদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে আইনি স্বীকৃতি দিয়ে রাজস্ব বাড়াতে চাইছে রাজ্য। জমির খাজনা আদায়ের ওপরেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর এই মর্মে জেলায়-জেলায় চিঠিও পাঠিয়েছে।