শিশির-দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ মমতা সরকারের, তুঙ্গে জল্পনা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের একবার রাজ্য রাজনীতি কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এল অধিকারী পরিবার। নির্বাচনের আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন অধিকারী পরিবারের তাবড় নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপর থেকেই পরিবারের বাকি সদস্যদেরও বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা ছিল চরমে। মন্ত্রী অমিত শাহের সভায় উপস্থিত থেকে গেরুয়া শিবিরের নাম লেখান পিতা শিশির অধিকারীও। তবে শুরু থেকেই মৌন থেকেছেন ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। সরাসরি তৃণমূল ত্যাগের কোন লক্ষন দেখা যায়নি তার মধ্যে। এমনকি এ বিষয় নিয়ে সেভাবে মুখও খোলেননি তিনি। অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে সেভাবে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি দলও। নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই একাধিক নেতাকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। কিন্তু স্বয়ং সৌমেন মহাপাত্র দিব্যেন্দু অধিকারির বিরুদ্ধে চিঠি লিখলেও সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি দল। যদিও দূরত্ব বেড়েছে। একাধিক প্রশাসনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দিব্যেন্দুকে।

শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তা তুলে নিল রাজ্য সরকারঃ

শনিবার সকালে কেন্দ্র ওয়াই ক্যাটাগরি নিরাপত্তা দেওয়ার পরেই সাংসদ শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তা তুলে নেয় রাজ্য সরকার। এমনকি কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর বুলেটপ্রুফ গাড়িও ফিরিয়ে নিয়েছে তারা। এমনটাই অভিযোগ করলেন, তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপি বিধায়ক রাজ্যে নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রের তরফে নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছিল। আর সেই কারণেই ৬৬ জন বিজেপি বিধায়কের জন্য আলাদা করে নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। এর সাথে শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারীর জন্যেও নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে।

দিব্যেন্দুর অভিযোগঃ

যদিও কেন্দ্রের কাছে কোন রকম নিরাপত্তা চাননি বলেই অভিযোগ করেন দিব্যেন্দু অধিকারী। সাংবাদিকদের তিনি জানান, “আমরা কোথাও কোনও আবেদন করিনি৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তরফে রাজ্যের মধ্যে আমাকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মধ্যে৷ পাশাপাশি রাজ্যের দেওয়া নিরাপত্তা যেমন ছিল থাকবে৷ কিন্তু অদ্ভূত ভাবে আজকে সকালবেলা জানতে পারলাম, আমার রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তারক্ষীদের তুলে নেওয়া হয়েছে৷ শিশিরবাবুর বুলেটপ্রুফ গাড়ি এবং নিরাপত্তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ আমাকে কিছু জানানোও হয়নি৷ এটা তো ন্যূনতম ভদ্রতা৷ গতকাল রাত সাড়ে বারোটার সময় আমার নিরাপত্তারক্ষীদের ফোন করে ফিরে যেতে বলা হয়েছে৷ আমি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব, তিনি নিশ্চিত ভাবে এটা বিচার করবেন এবং আমাদের নিরাপত্তারক্ষী ফিরিয়ে দেবেন৷ এই আবেদন তাঁর কাছে রাখব৷ বর্তমানে এই রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে আমরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে অভাব বোধ করছি৷”

রাজ্য পুলিশের বক্তব্যঃ

জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, দিব্যেন্দু অধিকারি কিম্বা শিশির অধিকারী নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়নি। বরং তা পরিবর্তন করা হয়েছে। রাজ্য তরফে নিরাপত্তা যেমন ছিল তেমনই থাকবে। শুক্রবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে এই চিঠি পৌঁছায়। যতই বলা হয়েছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি রাজ্যের নিরাপত্তাও তৎপর থাকবে। সেই অনুযায়ী জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, রাজ্য তাদের নিরাপত্তা তুলে নেয়নি। তবে যারা ছিল তাদেরকে পরিবর্তন করা হয়েছে। দিব্যেন্দু অধিকারী এবং শিশির অধিকারীর জন্য তিনজন করে নিরাপত্তারক্ষী দিয়েছিল রাজ্য। রাজ্য পুলিশের দাবি, এই নিরাপত্তারক্ষীরা এখনো একই ভাবে কাজ করবেন।

তবে অনেকেই মনে করছেন, বিশেষত দিব্যেন্দু অধিকারীর জন্য কেন্দ্রের ওয়াই ক্যাটাগরীর সিকিউরিটি দেওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ সরাসরি দলের সঙ্গে কোনো রকম বিরুদ্ধতা তৈরি না করলেও নির্বাচনে সেভাবে দেখা যায়নি তাকে। আর সেই কারণেই হয়তো কিছুটা আশার আলো দেখছে বিজেপি।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর