বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে সর্বস্ব খুইয়েছিলেন অনেকে। তাই অতীতের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার আরও কড়া হচ্ছে রাজ্য (West Bengal Government) প্রশাসন। এই কারণেই এবার ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থা আটকাতে কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থার উপর আর ভরসা করতে পারছে না বাংলা। নবান্ন সূত্রে খবর, ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুললেই এবার তাদের সম্পর্কে সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে ডিরেক্টরেট অব ইকনমিক অফেন্সেসের (ডিইও) এর কাছে।
এনবিএফসি সংস্থাগুলিকে ডিরেক্টরেটে নাম লেখানোর সিদ্ধান্ত নবান্নের (West Bengal Government)
কোন কোম্পানি ঝাঁপ বন্ধ করলে বা আমানতকারীদের টাকা ফেরত না দিলে ওই ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে যাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যায় এবং কোম্পানির সমস্ত সম্পত্তি এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি যাতে বাজেয়াপ্ত করা যায় তার জন্যই এবার আলাদা করে ডেটা ভান্ডার তৈরি করা হচ্ছে। প্রায় এক দশকের বেশি সময় আগে ২০১৩ সালে সারদা, রোজভ্যালি এবং আরও কয়েকটি চিটফাট কোম্পানির কেলেঙ্কারির কথা সামনে এসেছিল। ওই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল সারা বাংলা। এই চিটফান্ড কেলেঙ্কারি জেরে প্রতারিত হয়েছিলেন কয়েক কোটি আমানতকারী। অনুমতি ছাড়াই বাজার থেকে তারা টাকা তুলেছিল। এই ঘটনার তদন্ত শুরু হতেই প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নিয়মক সংস্থার ভূমিকা নিয়ে।
সে সময় নিজের ঘাড় থেকে দায় ঝেড়ে ফেলতে রাজ্যের (West Bengal Government) দিকেই আঙুল তুলেছিল কেন্দ্র। অভিযোগ করেছিল রাজ্য প্রশাসন এই সমস্ত সংস্থার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেনি আর সেই কারণেই চিটফান্ড সংস্থাগুলির রমরমা বেড়েছিল। এনবিএফসি কোম্পানিগুলি সেবি আরবিআইয়ের নিয়ম মেনে টাকা তুলছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট নিয়মক সংস্থার। কিন্তু তাদের একটা বড় অংশকে ‘ম্যানেজ’ করে ব্যবসা চালানোর অভিযোগ ওঠে এই সমস্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে। তাই এবার কেন্দ্রের উপর আর ভরসা করতে চাইছে না রাজ্য। দিল্লির মতোই একটি আলাদা নিয়মক সংস্থা করতে চাইছিল তারা। এই কারণে ডিরেক্টরেট অব অফেন্সেসকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে নবান্ন।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের বাজেটেই বাংলার বিপুল লক্ষ্মীলাভ! লাভবান ৪ কোটি মানুষ! প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট
ডিইওর তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলিকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ছাড়পত্র নেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের কাছেও নাম নথিভুক্ত করতে হবে। রাজ্যের কাছে নাম তালিকাভূক্ত করার পর ওই সমস্ত কোম্পানির ডিরেক্টর পদে কারা রয়েছেন তাদের সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য অর্থাৎ তাদের ঠিকানা, কতজন আমানতকারী ও এজেন্ট রয়েছেন,আমানতকারীদের কাছ থেকে কী শর্তে কত টাকা তোলা হয়েছে, তাদের টাকা ফেরানোর জন্য কি পরিকল্পনা করা হয়েছে, এছাড়াও কারা চার্ডার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট রয়েছেন,পূর্ণাঙ্গ ব্যালেন্স শিটের হিসেবসহ সমস্ত নথি তিনমাস অন্তর আপডেট করতে হবে।
কোন কোন এনবিএফসি রাজ্যে শাখা বা হেড অফিস খোলার পরেও নাম নথিভুক্ত করল না, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি থেকে প্রাপ্ত ডেটার ভিত্তিতে ডিইও সেই সম্পর্কেও নজরদারি চালাবে। এরপর সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছে সতর্কবার্তা পাঠানো হবে। তারপরেও যদি কেউ উদ্যেগ না নেয় তাহলে জরিমানা থেকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই খবর নবান্ন সূত্রে।