বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চাকরি না পেয়ে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) অধিকাংশ বেকার যুবক-যুবতী পাড়ি দিচ্ছেন ভিন রাজ্যে। কাজের অভাবে বাংলার একাধিক কর্মক্ষেত্রে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে বেকারত্বের হার। যা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হামেশাই তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে রাজ্য। এবার এই বদনাম ঘোচাতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। রাজ্যের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য এবার এক বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
৫০ হাজার বেকার যুবককে ট্রেনিং দেবে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) সরকার
প্রসঙ্গত রিপোর্ট বলছে মাছ উৎপাদনে দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)। দেশের মধ্যে মাছ উৎপাদনে বর্তমানে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলা। এই মাছ চাষকে কেন্দ্র করে স্বনির্ভর হয়ে উঠেছেন রাজ্যের হাজার হাজার যুবক। তাই এবার মৎস্য চাষকে হাতিয়ার করেই রাজ্যে ব্যাপক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। এই কারণে এবার আর দ্বিতীয় স্থান নয় বরং সারা দেশের মধ্যে মৎস্য চাষে প্রথম স্থান অর্জন করাই লক্ষ্য রাজ্যের।
রিপোর্ট বলছে গত বছর, এই মাছ চাষের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উৎসাহিত করা হয়েছে ২০ হাজার জন যুবককে। ২০২৫ সালে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০ হাজারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্যের (West Bengal) মৎস্য দপ্তর। জানা যাচ্ছে,মৎস্য চাষের প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর নিজের পুকুরে মাছ চাষ করলে মাসে অন্তত ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা উপার্জন করা যাবে। এরফলে এক বছরে তাদের আয় দাঁড়াবে দু’লক্ষ টাকা।
রাজ্যের (West Bengal) মৎস্য মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী এপ্রসঙ্গে বলেছেন, জেলায় জেলায় মাছ চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে যুবকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০২৫ সালের মধ্যে তাঁরা দ্বিগুণ যুবককে এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন। তবে একই সাথে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন মাছ চাষ করে কোন লাভ হবে না।
আরও পড়ুন: করোনা ভ্যাকসিনে মৃত্যু হলে পরিবারকে সাহায্য করবে কেন্দ্র? যা বলল সুপ্রিম কোর্ট
জানা যাচ্ছে, মৎস্য দপ্তরের জেলাস্তরের আধিকারিকরাই ব্লকে ব্লকে গিয়ে প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন। প্রথম তিনদিন টানা প্রশিক্ষণ পর্ব চলার পর, একমাস পর তাদের ডেকে আবার একদিনের ক্লাস নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণের জন্য একটি বই তৈরি করা হয়েছে মৎস্য দপ্তরের তরফ থেকে। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের একজন অভিজ্ঞ আধিকারিক জানিয়েছেন কোন মাছের জন্য কি খাবার দেওয়া উচিত উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কি করনীয় কোন মাছের জন্য কোন ধরনের জল প্রয়োজন এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সবটাই শেখানো হবে।
প্রসঙ্গত রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাছ চাষ হয় উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মেদিনীপুর জেলায়। একটা সময় বাংলাকে মাছ চাষের জন্য ব্যাপকভাবে নির্ভর করতে হতো প্রতিবেশী রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের ওপর তবে নিজস্ব উৎপাদন বৃদ্ধির পর সেই ছবি অনেকটাই বদলে গিয়েছে। এবার আগামী এক বছরের মধ্যে মৎস্য উৎপাদনে সারা দেশের মধ্যে বাংলা প্রথম স্থান অর্জন করবে বলেই মনে করছেন তারা। তাছাড়া বর্তমানে রাজ্যের মাছের উৎপাদন এমন জায়গায় পৌঁছে যে রাজ্য থেকে মাছ রপ্তানি করাও শুরু হয়েছে যা পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।