বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিগত কয়েক দশক ধরে ভারী শিল্পের ক্ষেত্রে ব্রাত্যই থেকেছে বাংলা। ভারী শিল্প প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু বা কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলি। তবে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের (এমএসএমই) ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) অবস্থান কিন্তু শীর্ষস্থানেই।
শিল্পের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) অবস্থান
এমএসএমই ক্ষেত্রে এক বা দুই নম্বরের মধ্যে অবস্থান বাংলার। কেন্দ্রের রিপোর্ট জানাচ্ছে, মহারাষ্ট্র, গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশের মতো বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলি শিল্পের ঝাঁপ বন্ধের তালিকায় শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে। সেই তালিকায় বলা যেতেই পারে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) অনেকটাই ‘পিছিয়ে’। একটি পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় ৬০ হাজারের কাছাকাছি শিল্প সংস্থা গত চার বছরে বন্ধ হয়েছে দেশ জুড়ে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানিয়েছিলেন, ব্যবসা ক্ষেত্রে দায়ভার নিতে হবে ব্যবসায়ীকেই। সেক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ থাকবে না সরকারের। বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া বা প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করার মতো মানসিকতা নেই পশ্চিমবঙ্গের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই নীতি থেকেই স্পষ্ট কেন পশ্চিমবঙ্গে বড় শিল্পের ক্ষেত্রে কোনও আর্থিক সুবিধা বা ইনসেনটিভ স্কিম চালু নেই।
আরোও পড়ুন : Jio- Airtel-এর উড়ল ঘুম! ১৫০ টাকার নিচে ২ টি দুর্ধর্ষ রিচার্জ প্ল্যান লঞ্চ করল Vi, বেজায় খুশি গ্রাহকেরা
তবে ছোট শিল্প বা এমএসএমই ক্ষেত্রে বিশেষ আর্থিক সুবিধা প্রদান করে থাকে বাংলার সরকার। এই ধরনের সুযোগ-সুবিধা অন্যান্য রাজ্যগুলিও দিয়ে থাকে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে। তবে সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যগুলিতে চোখে পড়ার মতো হ্রাস পেয়েছে শিল্প সংস্থার সংখ্যা। কেন্দ্রের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ আর্থিক বছর থেকে সবথেকে বেশি এমএসএমই বন্ধ হয়েছে মহারাষ্ট্রে।
আরোও পড়ুন : অবশেষে! নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে বড় আপডেট, তোলপাড়
মহারাষ্ট্রে গত চার বছরে ঝাঁপ ফেলেছে প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি শিল্প সংস্থা (Industry)।তামিলনাড়ুতে এই সংখ্যাটা প্রায় ৮০০০ ও গুজরাটে প্রায় ৬ হাজার। শিল্প সংস্থা বন্ধের ক্ষেত্রে তালিকায় এরপরই রয়েছে যথাক্রমে রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশ। এই রাজ্যগুলির তুলনায় অপেক্ষাকৃত অনেকটাই ভালো জায়গায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। উল্লেখিত সময়কালে বাংলায় বন্ধ হয়েছে প্রায় ২ হাজারের কাছাকাছি শিল্প প্রতিষ্ঠান।
বণিকসভা মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল শুভাশিস রায় বলছেন, গত ৫০ বছরে খুব একটা ভারী শিল্পের মুখ দেখেনি পশ্চিমবঙ্গ। তবে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের মাধ্যমে শক্তিশালী হচ্ছে বাংলার অর্থনৈতিক মানচিত্র। সেক্ষেত্রে সবথেকে বেশি অবদান রয়েছে বাংলার নিজস্ব ভূমিপুত্রদের। এছাড়াও সরকারি সাহায্য ও পরিকাঠামো ছোট শিল্পকে ত্বরান্বিত করছে বাংলায়।