বাংলাহান্ট ডেস্ক: এই গরমে কলকাতা থেকে বেরিয়ে কয়েকদিন পাহাড়ে কাটিয়ে আসতে মন চাইছে? কিন্তু আপনার মতো বহু মানুষেরই তো একই কথা মনে হচ্ছে। তাই তো পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন হিল স্টেশনে (Hill Station) উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়। দার্জিলিং-গ্যাংটকে নেমেছে মানুষের ঢল। ফলে সেখানে সহজে হোটেল বুকিং পাওয়াও যাচ্ছে না। তাই আপনি কি ওই অঞ্চলেই কোনও অফবিট জায়গা খুঁজছেন? কোলাহলের থেকে দূরে, একটু নিরিবিলিতে কাটিয়ে আসতে চান ক’টা দিন? আমরা আপনাকে সন্ধান দেব এমনই এক জায়গার।
আপনি হয়তো জেনে থাকবেন, বিগত কয়েক বছর ধরে পাহাড়ের কোলের বিভিন্ন ছোটখাটো গ্রাম অফবিট স্থান হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর ফলে আজকাল সেখানেও বেড়ে গিয়েছে মানুষের আনাগোনা। তবে আমরা আপনাকে এমন একটি জায়গার ব্যাপারে জানাবো, যেটি এখনও তেমন বিখ্যাত হয়ে ওঠেনি। তাই এটি এখনও প্রকৃত অর্থেই একটি অফবিট লোকেশন হিসেবেই রয়েছে। এই জায়গাটি আবার অবস্থিত খুব কাছেই। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের খুব কাছেই অবস্থিত জায়গাটি।
এই অফবিট জায়গাটির নাম হল ফিক্কালে গাঁও। হিমালয়ের কোলে সবুজে ঘেরা ছোট্ট একটি গ্রাম। যেখানে এই শুকনো গ্রীষ্মে পাবেন মনোরম পরিবেশ। আপনার সকাল শুরু হবে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ এবং বিভিন্ন অচেনা পাখির ডাক দিয়ে। প্রকৃতি যেন নিজে হাতে সাজিয়েছে এই জায়গাটিকে। পাইনের জঙ্গলে ঘেরা এই ছোট্ট গ্রামটি কয়েকদিন নিশ্চিন্তে ছুটি কাটিয়ে আসার জন্য একেবারে আদর্শ জায়গা। আপনি যদি একটু নিরিবিলিতে ছুটি কাটাতে যেতে চান, তাহলে এই জায়গাটি আপনার জন্য একেবারেই আদর্শ।
যদিও এখনই অতটাও বিখ্যাত হয়ে ওঠেনি এই জায়গাটি। কালিম্পং শহর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত ফিক্কালে গ্রাম। এর ঠিক তিন থেকে চার কিলোমিটার দূরেই রয়েছে ডেলো পাহাড়। ঘুম থেকে ওঠা থেকে বিকেল অবধি কাঞ্চনজঙ্ঘার বিভিন্ন রূপ দেখতে দেখতে দিব্যি এখানে দিন কাটানো যায়। যদিও পাহাড়ের আবহাওয়ার ব্যাপারে কিছু বলা যায় না। আপনি হয়তো কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শন পেতে চাইছেন। কিন্তু বাধ সাধল মেঘ। দুপুরের পর থেকে কুয়াশা পড়ে গেলে তো কোনও কথাই নেই।
ফিক্কালে যেহেতু ছোট একটি গ্রাম, তাই এখানে থাকার বিকল্প একটু কম। এখানে একাধিক হোম স্টে রয়েছে। কিন্তু সেগুলি আগে থেকে বুক করে রাখতে হবে। নইলে এখানে গিয়ে বিপদে পড়বেন। এখান থেকে একটু এগোলেই চোখে পড়বে তিস্তা নদী, রংপো বাজার, কালিম্পং এবং দার্জিলিং। সকাল সকাল গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে মর্নিং ওয়াকও করে আসতে পারেন। কাছেই একটি হনুমান মন্দির ও তিব্বতী মনাস্ট্রি রয়েছে। শান্ত পরিবেশে ভগবানের আরাধনাও আপনার মনকে প্রশান্তি এনে দেবে।
ফিক্কালে থেকে তিন-চার কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত ডেলো পাহাড়। আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী হন, তাহলে এটি আপনার জন্য একটি আদর্শ জায়গা। তার কারণ এখানে রয়েছে প্যারা গ্লাইডিং করার সুযোগ। এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে উড়ে বেড়াতে পারবেন আপনিও। এবার আসি কীভাবে যাবেন, সেই কথায়। এখানে পৌঁছনো খুবই সহজ। নিউ জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি অথবা বাগডোগরা থেকে গাড়ি করেই এখানে চলে যেতে পারেন। অথবা সরকারি বাসে করে কালিম্পং গিয়ে সেখান থেকে শেয়ার গাড়িতে ফিক্কালে গাঁও। সব মিলিয়ে দু’-তিন দিনের জন্য ঘুরে আসতেই পারেন এখান থেকে।