বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গতকালই নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলার চাকরি প্রার্থীদের নাম সুপারিশ করা প্রভাবশালীদের তালিকা পেশ করে শোরগোল ফেলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। ওই তালিকায় ইতিমধ্যেই নাম উঠে এসেছে দিব্যেন্দু অধিকারী, ভারতী ঘোষ এবং মমতাবালা ঠাকুর,শওকত মোল্লার মত প্রভাবশালীদের। যদিও তাঁরা প্রত্যেকেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার নাম জড়াল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান শ্যামল সাঁতরার। জানা যাচ্ছে সিবিআইয়ের নথিতে ‘সুপারিশকারী’দের মধ্যে নাম রয়েছে তাঁরও।
নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) নাম জড়াতেই CBI-নথি নিয়ে মুখ খুললেন এই প্রাক্তন মন্ত্রী
সিবিআই-এর পেশ করা তালিকা থেকে জানা যাচ্ছে, মোট ২২ জনের চাকরি হয়েছিল তাঁর সুপারিশে। এই অভিযোগ সামনে আসতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। ইতিমধ্যে গোটা বিষয়ের তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। যদিও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবী করেছেন শ্যামলবাবু।
সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে শ্যামলের দাবি, ‘কোনও চাকরিপ্রার্থীর নাম আমি সুপারিশ করিনি। বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে আমার মতো তফসিলি সম্প্রদায়ের নেতাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ফাঁসানো হচ্ছে। সিবিআই তলব করলে আমি দলের অনুমতি নিয়ে তদন্তে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’
২০১৪ সালে কোতুলপুর বিধানসভা উপনির্বাচন জিতে বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন শ্যামল সাঁতরা। ২০১৬ সালে আবার ওই একই আসন থেকে জিতে রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন তিনি। পরবর্তীতে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হন তিনি। তারপর পদ চলে যায় তাঁর। তবে সম্প্রতি তাঁকে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংসদের চেয়ারম্যান পদে বসিয়েছে রাজ্যের শাসক দল।
আরও পড়ুন: ভেঙে পড়েছে লেডিস টয়লেট, নেই পর্যাপ্ত ক্লাসরুম! কঙ্কালসার স্কুল নিজের টাকায় সাজাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক
২০২০ সাল থেকে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার (Recruitment Scam) তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এই মামলার তদন্তে সম্প্রতি সিবিআই-এর হাতে এসেছে ৩২৪ জন শিক্ষকের নামের তালিকা। তাদের সবার চাকরি হয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন হেভিওয়েটদের সুপারিশে। সেই তালিকা থেকেই দেখা গিয়েছে রাজ্যে এমন ২২ জন শিক্ষক রয়েছেন যাঁদের নিয়োগ হয়েছিল এই শ্যামল সাঁতরার সুপারিশে।
সিবিআই-এর দেওয়া ওই তালিকা সোশ্যাল মিডিয়ার ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে ব্যাপক শোরগোল। একে একে সুর ছড়িয়েছে রাজ্যের সব বিরোধীপক্ষ। একদিকে বিজেপির দাবি কার নির্দেশে কত টাকার বিনিময়ে শ্যামল সাঁতরা ওই ২২ জনকে চাকরি দিয়েছিলেন। তা অবিলম্বে সিবিআইকে জানিয়ে দেওয়া উচিত। অন্যদিকে বামেদের দাবি, পুরো ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্ত হলেই আসল ঘটনা সামনে চলে আসবে।