বাংলাহান্ট ডেস্ক : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর বাংলা জুড়ে যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই নীল এবং সাদা এই দুই রঙ। এবার বদলাতে চলেছে রাজ্যের প্রতিটি স্কুলের ইউনিফর্মের রংও। বঙ্গের নীল সাদা রীতি মেনে সব স্কুলের ড্রেসও এবার হতে চলেছে নীল সাদা। শিক্ষা দফতরকে এমনটাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। সেখান থেকেই এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে ব্লকে ব্লকে।
এতদিন স্কুলগুলিকে ইউনিফর্ম তৈরির জন্য টাকা দিয়ে দেওয়া হয় সরকারের তরফে। সেই টাকাই বাইরে থেকে কাপড় কিনে নিজেদের মতন ইউনিফর্ম বানাতো স্কুলগুলি। অনেক ক্ষেত্রেই এই কাপড় আসত ভিন রাজ্য থেকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর দাবি এর ফলে রাজ্যের বয়ন শিল্পের প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে। রাজ্যের বয়ন শিল্পের উন্নতি ঘটাতেই এহেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই খবর। শুধু তাই নয়, স্কুলগুলির জন্য আলাদা করে বিভিন্ন রঙের পোষাক তৈরি করতেও বেশ ঝামেলায় পড়তে হয় রাজ্যকে। এখন থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি বয়ন সংস্থাগুলির থেকে কাপড় কিনবে রাজ্য সরকারের সংস্থা তন্তুজ। তন্তুজর মাধ্যমে সেই কাপড় থেকেই ইউনিফর্ম বানাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি।
পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত ছেলেদের দেওয়া হবে একটি হাফ শার্ট, হাফপ্যান্ট এবং একটি করে ফুল শার্ট ফুল প্যান্ট। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়ারা হাফ এবং ফুল শার্টের পাশাপাশি পাবে দুটি ফুল প্যান্ট। পঞ্চম শ্রেনী অবধি মেয়েদের দুটি শার্ট, একটি স্কার্ট এবং একটি টিউনিক দেওয়া হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীরা পাবে দুটি করে সালোয়ার কামিজ এবং ওড়না। দরকারে দেওয়া হবে টাইও। লোগো সগ ব্যাজও দেবে সরকারই। ব্যাজে থাকবে বিশ্ব বাংলার লোগো। নীল সাদা স্কুল ড্রেসের সঙ্গেই পড়ুয়াদের জুতো এবং ব্যাগও দেওয়া হবে সরকারের তরফে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তে অবশ্য খুশি নয় স্কুলগুলি। প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাদের একটি সংগঠনের সম্পাদক চন্দন কুমার মাইতি জানিয়েছেন, এই এক ধরনের পোষাকে ছাত্রছাত্রীদের স্বতন্ত্রতা থাকবে না। অন্য স্কুলের পড়ুয়া স্কুলে ঢুকে পড়লে বোঝা যাবে না তাও। একই ভাবে এই সিদ্ধান্তকে মানতে পারছে না পড়ুয়ারও। এতদিনের ইউনিফর্ম বদলে যাবে শুনে মুখ ভার তাদের। তাদের মতে ইউনিফর্ম স্কুলের পরিচয়। সেই পরিচয়টাই না থাকলে স্কুলের ঐতিহ্য এবং স্বতন্ত্রতা নিয়ে গর্ব করার জায়গাটিই থাকছে না আর। ফলে নবান্নের এহেন নির্দেশে যে বেশ ভালোরকই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে রাজ্য জুড়ে তা বলাই বাহুল্য।