বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গে, সরকারি প্রকল্প ‘আবাস যোজনা’য় (Awas Yojana) টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই গরীব মানুষদের জন্য বাড়ি তৈরির টাকা নিজস্ব কোষাগার থেকেই দিচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) নজরদারিতে বড় পদক্ষেপ নবান্নের
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই দুর্নীতির অভিযযোগ এনেই বাংলাকে আবাস যোজনা (Awas Yojana) সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ করে কেন্দ্রের মোদি সরকার। তাই আবাস যোজনা প্রকল্পে টাকা দেওয়ার শুরুর দিন থেকেই দ্বিগুণ সাবধানী রাজ্য সরকার। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নবান্ন থেকে কড়া বার্তা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলেন কোন প্রভাবশালী যেন গ্রামের মানুষদের ওর প্রভাব খাটিয়ে আবাসের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার চেষ্টা না করে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে উঠে এসেছে প্রভাবশালীদের প্রভাব খাটিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ। তবে আবাস প্রকল্পে (Awas Yojana) দুর্নীতি ঠেকাতে বদ্ধপরিকর নবান্ন-ও। তাই প্রথম থেকেই চলছে কড়া নজরদারি। বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা ভিত্তিক প্রশাসনিক কর্তাদেরও। এছাড়াও প্রত্যেক জেলায় পঞ্চায়েত মন্ত্রীর উপস্থিতিতে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেকটি জেলায় উপভোক্তাদের সাহায্য দিতে নির্দিষ্ট কন্ট্রোল রুম এবং হেল্প লাইন নম্বর চালু করারও নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
গোটা প্রক্রিয়ার ওপর জেলাশাসকদের নজরদারি থাকলেও জেলা প্রশাসনের বাকি অফিসারদেরও এই কাজে যুক্ত করা হয়েছে। উপভোক্তাদের তালিকা পুনরায় যাচাই এবং টাকা পাঠানোর আগের মুহূর্তে আরও একবার ঝাড়াই-বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিডিও এবং জেলা পরিষদের ওপর। এই মুহূর্তে আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার কাজ প্রায় শেষ শেষ লগ্নে এসে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় বন্ধ থাকবে পানীয় জল সরবরাহ! কতদিন ব্যাহত হবে পরিষেবা? জানালেন মেয়র
নজরদারি বাড়াতে প্রতিটি জেলায় ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনি জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া জেলায় গিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেলেছেন। এরপর যাবেন বাকি সব জেলাতেও। একইসাথে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, কোথাও,কোনও ধরনের অভিযোগ পেলেই দ্রুত তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন।
কেন এই তৎপরতা?
রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা এই বিষয়ে জানিয়েছেন শুরু থেকেই আবাসের আড়ালে উপভোক্তাদের থেকে টাকা তোলার অসাধু চেষ্টা ঠেকানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। তাই টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া চলাকালীন কোনও উপভোক্তাকে নিয়ে কোন অভিযোগ আসলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এলাকার প্রভাবশালীদের গোটা প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখতে, জেলাপ্রশাসনগুলিকে দায়িত্ব দিয়েছে নবান্ন। সামগ্রিক ব্যবস্থার ওপর নজর রাখতে ব্লক স্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। চালু করা হয়েছে হেল্প লাইন নাম্বারও।