বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছুমাস ধরে বাংলায় দাঁড়িয়ে সর্বাধিক চর্চিত নামের মধ্যে একটি কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক কড়া নির্দেশ দিয়ে চাকরিপ্রার্থী সহ সারা রাজ্যের মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপস নয়। একাধিক অভিযোগের কড়া ‘বিধান’ দিয়ে আন্দোলনকারীদের ‘ভগবান’ হয়ে উঠেছেন তিনি।
তবে আপাতত এসএসসি-র (SSC Recruitment Scam) কোনও মামলা তিনি শুনবেন না বলে সোমবার জানিয়ে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ছেড়ে দিলেন SSC-র সমস্ত মামলা। প্রসঙ্গত, আদালতের পুজো অবকাশ শেষ হওয়ার পর গতকালই জাস্টিস গাঙ্গুলির একক বেঞ্চে এসএসসি সংক্রান্ত মামলাগুলির শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তবে সেদিনই এই মামলা গুলি থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি।
কারণ কী?
বিচারপতি জানিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court Of India) নির্দেশ মেনে এসএসসি-র মামলাগুলি আপাতত ছেড়ে দিলেন তিনি। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ওই মামলাগুলি বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে পাঠিয়েছেন। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনেই কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এই মামলাগুলি বিচারপতি বসাকের বেঞ্চে পাঠান।
কোন কোন মামলার শুনানি আর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে হবে না?
এসএসসি গ্রুপ ডি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সন্দীপ প্রসাদ নামে এক চাকরি প্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ হন। ২০২১সালের নভেম্বর মাসে সেই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই মামলা সরলো বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে।
একই ভাবে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সাবিনা ইয়াসমিন নামে এক চাকরিপ্রার্থীর করা মামলাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই মামলা সরলো বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে। অর্থাৎ এই মামলার শুনানি আর তার এজলাসে হবে না।
অনিন্দিতা বেরা নামে আরেক চাকরিপ্রার্থীর দায়ের করা নবম-দশম শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতির মামলাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই মামলাও আর শুনতে পারবেন না বিচারপতি।
আরও পড়ুন: ঝুলিয়ে রাখছে কেন? রাজ্যপালেদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি! কেন্দ্রের জবাব তলব করল SC
এছাড়াও এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলায় বহু শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। গ্ৰুপ সি, গ্ৰুপ ডি, বহু অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন জাস্টিস গাঙ্গুলি। বিচারপতির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। সেই সব মামলাই সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি কাছে ফেরত পাঠায়।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি যত শীঘ্রই সম্ভব এই মামলাগুলির শুনানির জন্য বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করবেন। সুপ্রিম নির্দেশের পরই নতুন বেঞ্চ গড়ে সেই সমস্ত মামলা বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেই হবে। আগামী ২৯ নভেম্বর প্রাথমিক মামলার শুনানি রয়েছে।