দীর্ঘদিন হয়নি শিক্ষক নিয়োগ! নেই পড়ুয়ারাও, পশ্চিম মেদিনীপুরের বন্ধের মুখে ২৫০টি মাধ্যমিক স্কুল

বাংলাহান্ট ডেস্ক : চূড়ান্ত অবহেলার শিকার স্কুল! ঝোপ জঙ্গলে ভরা স্কুলে লোহার গেটে জং ধরেছে। পাত্তা নেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের, কোথাও আবার পড়ুয়ারাও নেই। শিক্ষক নেই স্কুলে, তাই স্কুলে গিয়েই বা কি হবে? বলছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। আবার যেখানে স্কুলের শিক্ষক আছে, সেখানে দেখা মিলছে না পড়ুয়াদের। ফলে পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore) আড়াইশোর মতো মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলি শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের অভাবে প্রায় ধুঁকছে।

শিক্ষকদের অভিযোগ, তাঁরা সরকারের অবহেলার শিকার। শিক্ষকরা না থাকার কারণে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না অভিভাবকরা। শিক্ষকদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। পশ্চিম মেদিনীপুরের শিশু শিক্ষা কেন্দ্রগুলির অবস্থাও বেহাল। নিখিল বঙ্গীয় মাধ‌্যমিক শিক্ষা সম্প্রসারক ও সহায়িকা সমিতির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক প্রশান্ত দিন্ডা এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন।

আরোও পড়ুন : ‘মানুষের থেকে যারা টাকা নিয়েছেন…’! মমতার পর এবার চরম হুঁশিয়ারি পার্থের, তোলপাড় বাংলা!

তিনি বলেন, “মূলত শিক্ষকের অভাবে জেলার সমস্ত মাধ‌্যমিক ও শিশুশিক্ষা কেন্দ্রগুলি বন্ধের পথে। একের পর এক শিক্ষক-শিক্ষিকা অবসর নিলেও নিয়োগ বন্ধ সেই ২০০৯ সাল থেকে। আসলে প্রথাগত শিক্ষার বাইরে, এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলির জন‌্য এই সরকারের কোনও ভাবনা নেই। মনে হয় যেন এই শিক্ষাকেন্দ্রগুলি উঠিয়ে দিতে চায় সরকার। আমরা বারবার এই বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।”

আরোও পড়ুন : এবার ভুলে যান ৯ বগির লোকাল! শিয়ালদায় এবার শুধুই ১২ কামরার ট্রেন, এই দিন থেকে শুরু পরিষেবা

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শিক্ষা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ‌্যক্ষ শ‌্যামপদ পাত্র জানান, “গোটা বিষয়টি রাজ‌্য সরকারের বিবেচনাধীন। রাজ‌্য সরকারের এই নিয়ে কোনও নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি। সামনের স্থায়ী সমিতির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। তবে বেশ কিছু মাধ‌্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র ও শিশু শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধ হয়ে পড়েছে আবার কিছু বন্ধের পথে।”

স্কুল ছুট পড়ুয়াদের শিক্ষার অঙ্গনে ফিরিয়ে আনার জন্য স্কুল বিহীন গ্রামগুলিতে মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছিল সেই বাম আমলে। শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের আওতায় প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণী এবং পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়ারা মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের আওতায় পড়তেন। এই শিক্ষা কেন্দ্রগুলিতে শিক্ষা সহায়িকা এবং শিক্ষা সম্প্রসারকদের নিয়োগ করা হতো।

School 2

মাসিক বেতনের বদলে ভাতা পেতেন তারা। ২০০৯ সালে এই শিক্ষক কেন্দ্রগুলিতে শেষবারের মতো নিয়োগ হয়। তারপর তো নিয়োগ বন্ধ। যার কারণে কোন স্কুল শিক্ষকহীন আবার কোন স্কুল পড়ুয়াহীন হয়ে পড়ে আছে। ঘাটাল ব্লকেও দুটি এমএসকে ধুঁকছে। শিক্ষা কেন্দ্র গুলির এই অবস্থার জন্য মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকরা।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর