“ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বন্ধ করেছি”, সমাধান সম্ভব কাশ্মীর সমস্যারও, আত্মবিশ্বাসের সুরে কী জানালেন ট্রাম্প?

বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) জানিয়েছেন যে, তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের কাশ্মীর বিরোধের সমাধান করতে পারেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন যে তিনি “যেকোনও কিছুর সমাধান করতে পারেন”। হোয়াইট হাউসে একটি বিল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশ দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত এবং তিনি তাদের একত্র করবেন।

কী জানিয়েছেন ট্রাম্প (Donald Trump):

কাশ্মীরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে উভয় দেশের সাথে কথা বলার কথা স্মরণ করিয়েছেন ট্রাম্প: মার্কিন প্রেসিডেন্ট (Donald Trump) জানান যে, তিনি উভয় দেশের সাথে তাদের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত সম্পর্কে কথা বলেছেন। ট্রাম্পের মতে, “আমি তাদের বলেছিলাম। ভারত এবং পাকিস্তানের কাশ্মীর নিয়ে নিজেদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। আমি তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা কতদিন ধরে চলছে। তারা বলেছিল ২,০০০ বছর ধরে।” তারপরেই তিনি হেসে বলেন, “ওহ, এটা একটা সমস্যা”।

ভারত জানিয়েছে কাশ্মীর একটি দ্বিপাক্ষিক সমস্যা: এদিকে, ট্রাম্প (Donald Trump) এহেন দাবি করলেও ভারত ধারাবাহিকভাবে বলে আসছে যে, কাশ্মীর একটি দ্বিপাক্ষিক সমস্যা এবং তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার জন্য এই বিষয়টি উন্মুক্ত নয়। অতীতে ট্রাম্পের অনুরূপ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি। যেখানে ভারত পুনর্ব্যক্ত করেছে যে পাকিস্তানের সাথে সমস্ত অমীমাংসিত সমস্যা দ্বিপাক্ষিক এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে হবে।

ট্রাম্প আরও দাবি করেছেন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) জানিয়েছেন যে, তিনি ফোন কল এবং বাণিজ্য সুবিধার মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধ এড়াতে পেরেছেন। তাঁর মতে, “আমি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ থামিয়েছিলাম। আর বাণিজ্য দিয়ে তা করেছি”। এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন “আমার মনে হয় না কেউ কখনও এটা নিয়ে লিখেছে, কিন্তু এটা বেশ দারুণ ছিল। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছিল।”

আরও পড়ুন: সিট নাম্বার ১১এ…..আহমেদাবাদের অভিশপ্ত বিমান দুর্ঘটনায় কীভাবে বাঁচলেন রমেশ? জানলে চমকে উঠবেন

“পরিস্থিতি পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল”: ট্রাম্প: এদিকে, ট্রাম্প (Donald Trump) আরও বলেছেন যে, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে পরিস্থিতি পারমাণবিক সংঘর্ষে রূপ নিতে পারত। ট্রাম্প বলেন, “আমি তাদের প্রত্যেককে ফোন করেছি। আমি উভয় নেতাকে অত্যন্ত সম্মান করি, আমি তাঁদের চিনি। তাঁদের সাথে বাণিজ্য নিয়ে কথা বলেছি”। ট্রাম্পের মতে, তিনি ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, যদি তারা যুদ্ধে জড়ায় অথবা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার শুরু করে, তাহলে তারা আমেরিকার সাথে বাণিজ্যের কথা ভুলে যেতে পারে। ট্রাম্প বলেন, “তারা বুঝতে পেরেছে এবং থামিয়ে দিয়েছে। আমি ফোন কল এবং বাণিজ্যের মাধ্যমে সেই যুদ্ধ বন্ধ করে দিয়েছি।”

ভারত-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনা চলছে: ট্রাম্প (Donald Trump) জানান, ভারত বর্তমানে একটি বাণিজ্য চুক্তির জন্য আমেরিকার সাথে আলোচনা করছে এবং পাকিস্তান শীঘ্রই ওই আলোচনায় অংশ নেবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ট্রাম্প জানান, “কেউ মারা যায়নি… তাদের উভয়েরই অত্যন্ত গুরুতর পারমাণবিক ক্ষমতা রয়েছে, এবং আমি মনে করি আমাদের কিছুটা কৃতিত্ব প্রাপ্য। রিপাবলিকান পার্টিও তাই। কারণ আমরা এভাবেই চিন্তা করি।”

আরও পড়ুন: আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে কী কারণ? জানাবে ব্ল্যাক বক্স, কীভাবে কাজ করে এই ডিভাইস?

ভারত উত্তেজনা হ্রাসের জন্য সামরিক আলোচনাকে কৃতিত্ব দিয়েছে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) বারংবার দাবি করেছেন যে, আমেরিকা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ ঠেকিয়েছে। তবে, ভারত ধারাবাহিকভাবে বলে আসছে যে, দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও)-দের মধ্যে সরাসরি আলোচনার ফলেই যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছে। উল্লেখ্য যে, গত ২২ এপ্রিলে পহেলগাঁও-তে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

যার ফলে ভারত গত ৭ মে পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিতে অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট প্রত্যাঘাত করে। এর প্রতিশোধ হিসেবে, পাকিস্তান গত ৮, ৯ এবং ১০ মে ভারতীয় সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। যার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ভারত। এমতাবস্থায়, গত ১০ মে ডিজিএমও-স্তরের আলোচনায় সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধের বিষয়ে পারস্পরিক চুক্তি হওয়ার পর যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।

দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও: