বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)। শুধু তাই নয়, ওই জেলায় একাধিক হিংসাত্মক ঘটনার প্রসঙ্গও বারংবার উঠে এসেছে খবরের শিরোনামে। ঠিক এই আবহেই কমরেড মহম্মদ সেলিমের “অপমানের” উত্তর দিতে খোলা চিঠি দিলেন কার্তিক মহারাজ। মূলত, গত ১৫ এপ্রিল মুর্শিদাবাদের সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে মহম্মদ সেলিম জানিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের অশান্তির ক্ষেত্রে উস্কানি দিচ্ছেন কার্তিক মহারাজ। সেই কারণে তাঁকে গ্রেফতার করার দাবিও জানিয়েছিলেন তিনি। এমতাবস্থায়, এবার উত্তর দিলেন কার্তিক মহারাজ। তিনি জ্যোতি বসুর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আপনাদের প্রিয় নেতা জ্যোতি বসু বলেছিলেন ‘আগে পাকিস্তানের দাবি মানা হবে তারপর দেশ স্বাধীন হবে।’ সেদিনের এই বক্তব্যের রেশ ধরেই গোটা বাংলায় ঘটে গিয়েছিল নারকীয় হিংসাযজ্ঞ….সেদিন কিন্তু কোনও সাধু সন্ন্যাসী দেশভাগের কথা বলেননি উস্কানিও দেননি।”
মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) হিংসাত্মক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কী জানালেন কার্তিক মহারাজ:
তিনি আরও জানান, “তারপর অখন্ড ভারত টুকরো হয়ে যাওয়ার পর অবশ্য আপনারাই আবার স্লোগান তুলেছিলেন ‘ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়।'” এছাড়াও তিনি নেতাজিকে “তোজোর কুকুর” বলার প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করে সাইবাড়ি, মরিচঝাপির হিন্দু গণহত্যার মামলাআর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। পাশাপাশি, ছেলে ধরার গুজব ছড়িয়ে আগুনে আনন্দমার্গী সন্ন্যাসীদের পুড়িয়ে মারার ঘটনাটিরও অবতারণা করেন কার্তিক মহারাজ।
তারপরেই মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ঘটনার প্রসঙ্গে কার্তিক মহারাজ বলেন, “কমরেড সেলিম, আমি কখন উস্কানি দিয়েছি, এটা বলতে হবে। আগে তো তাহলে ফিরহাদ, হুমায়ুন, সিদ্দিলকুল্লাকে গ্রেফতার করতে হবে। তাঁদের কথা তো বললেন না। এঁরা যখন ভাগীরথীতে হিন্দুদের কেটে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা বলেন দাওয়াতে ইসলাম দেন কলকাতা দখল করে নেওয়ার কথা বলেন তখন সেলিম ভাই কোথায় ছিলেন?” এরপর তিনি একে একে বিভিন্ন ঘটনার প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করেন।
শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠা মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) হিংসাত্মক পরিস্থিতির ঘটনাক্রম তিনি সামনে আনেন। আর তারপরেই তিনি সরাসরি মোহাম্মদ সেলিমের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, “তাহলে কারা এই পরিকল্পনা করল সেলিম ভাই? কারা উস্কানি দিল? তা তো জলের মতোই পরিষ্কার। তাহলে আপনি কেন ফের আমার মতো সন্ন্যাসীকে টার্গেট করলেন? আপনার অভিপ্রায় কী তা জানতে বড় ইচ্ছে হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: ঢাকার “এই” পদক্ষেপের কারণেই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে ভারত! সামনে এল আসল সত্যি
এদিকে, কার্তিক মহারাজ আরও জানান, “দেশবিরোধীদের সঙ্গে আপনারা হাত মিলিয়ে গাজা-প্যালেস্তাইনের মানবাধিকার নিয়ে সেই কবে থেকেই কলকাতায় রাজপথ অচল করেছেন, কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন নিয়ে আপনাদের চোখে জল আসে না। আপনাদের শাসনকালে ৩৫ বছরে একটিবারের জন্যও এ নিয়ে একটিও নিন্দা প্রস্তাব আপনারা বিধানসভায় আনেননি। আজ বাংলায় হিন্দুদের দুর্দশা দেখেও আপনারা নজর ঘুরিয়ে দিতে বলেন, জাতের নয় ভাতের লড়াই করতে হবে। মুর্শিদাবাদে যাঁরা খুন হলেন, আর যাঁরা ঘরছাড়া হয়ে মালদা-ঝাড়খন্ডে আশ্রয় নিলেন তাঁরা কিসের লড়াই করছেন কমরেড? জাতের না ভাতের?” ইতিমধ্যেই এই প্রসঙ্গে বাংলা হান্ট-কেও নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কার্তিক মহারাজ।