বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমবঙ্গে বেশ কিছু উত্তেজক ঘটনা ঘটেছে। শুধু তাই নয়, মুর্শিদাবাদ থেকে শুরু করে মালদার মত জেলাগুলি রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আন্দোলনের নাম করে সেখানকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার পেছনে বাংলাদেশের (Bangladesh) মৌলবাদীদের “উস্কানি”-র বিষয়টিও উঠে এসেছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ঠিক এই আবহেই এবার এমন একটি তথ্য সামনে এসেছে যেটি সম্পর্কে জানার পর অবাক হবেন প্রত্যেকেই। মূলত, চলতি বছরের মার্চ মাসের শুরুতে সূত্র মারফত একটি ডায়রি হাতে পেয়েছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর একজন আধিকারিক। মূলত, শেখ হাসিনার আমলের ওই ডায়েরিটি বাংলাদেশের সরকারি আমলাদের ব্যবহারের জন্য। বাংলা ও ইংরেজি সন-তারিখে লেখা ওই ডায়েরিতে এমন কিছু তথ্য ছিল যেগুলি সম্পর্কে জেনে অবাক হয়ে যান খোদ ওই গোয়েন্দা আধিকারিক। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেও এই সংক্রান্ত বিষয়টি উপস্থাপিত করেছেন তিনি।
একী পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ (Bangladesh):
এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে ওই ডায়েরিতে ঠিক কি লেখা ছিল? বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করছি। প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, ওই ডায়েরির মালিক ২০২৩-এর মাঝামাঝি ৩ দিনের একটি বিশেষ প্রশিক্ষণে গিয়েছিলেন। ওই ডায়েরির মালিক মূলত জামায়াতে ইসলামির সমর্থক এবং বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকারের উচ্চ পদেও নিযুক্ত। তবে, তিনি যে প্রশিক্ষণে গিয়েছিলেন সেটি কোনও সরকারি প্রশিক্ষণ ছিলনা। বরং ওই প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন জামায়াতে ইসলামি ও হেফাজতের ঘনিষ্ঠ মৌলানারা। এমতাবস্থায়, প্রশাসনিকভাবে উচ্চপদে নিযুক্ত থেকেও ওই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী আমলাদের দেশে খিলাফত প্রতিষ্ঠার জেহাদে তাঁদের কী কী করা উচিত তা শেখানো হয় বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, ওই প্রশিক্ষণে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত করার পরে “বৃহৎ বাংলা” খিলাফত কায়েমের লড়াইয়ে নামা। আর ওই আন্দোলনের মূল রূপরেখা প্রশিক্ষণে উপস্থাপিত করা হয়। যেগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাংলায় লিখে রেখেছিলেন ডায়েরির মালিক। পরবর্তীকালে একটি বিশেষ সূত্রের মাধ্যমে ওই ডায়েরি এসে পৌঁছয় ভারতীয় গোয়েন্দা আধিকারিকদের কাছে। সবথেকে চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, ওই প্রশিক্ষণে “বৃহৎ বাংলা” খিলাফতের যে ভৌগোলিক সীমানার কথা বলা হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের উত্তর-পূর্বের ৭ টি রাজ্য থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, দুই ২৪ পরগনা এবং কলকাতাকেও ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: “আর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নয়”, এবার PoK দখলের দাবি জানালেন অভিষেক, দিলেন কড়া বার্তা
যদিও, প্রাথমিকভাবে সেখানে জানানো হয়েছে আপাতত তাদের লক্ষ্য হল মুর্শিদাবাদ, মালদা এবং দুই দিনাজপুর জেলা। অর্থাৎ, ভৌগোলিকভাবে এই অঞ্চল গুলিকে নিয়েই তারা একটি পৃথক প্রদেশ গঠন করতে চায়। যার রাজধানী নির্ধারণ করা হবে মালদায়। যদিও, পরবর্তীকালে ২ চব্বিশ পরগনা এবং কলকাতাকে দখল করে এক্কেবারে হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত “বৃহৎ বাংলা” খিলাফতের সীমানা বৃদ্ধির প্রসঙ্গেও ওই উচ্চ পদস্থ আমলাদের জানানো হয়। এর পাশাপাশি নামনি অসম, বরাক এবং ত্রিপুরাকে নিয়ে দ্বিতীয় একটি প্রদেশের পরিকল্পনাও সামনে এসেছে। অসমের মুসলিম অধ্যুষিত একটি শহরকে যেটির রাজধানী করা হতে পারে। এদিকে, গত ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে বাংলাদেশের বিজয় দিবসে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন ইউনূস সরকারের উপদেষ্টা এবং ইউনূসের ঘোষণা মতো বাংলাদেশে (Bangladesh) অভ্যুত্থানের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড মাহফুজ আলম। তাঁর ওই পোস্টে “বৃহৎ বাংলা” খিলাফতের ছায়া ফুটে উঠেছিল। যদিও, সমালোচনার সম্মুখীন হয়ে ওই পোস্ট তিনি মুছে ফেলেন।
আরও পড়ুন: আগামী বছরেও IPL খেলবেন ধোনি? রাখঢাক না রেখে বড় আপডেট সামনে আনলেন বন্ধু সুরেশ রায়না
আরও একটি চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, ভারতের ওই নির্দিষ্ট অংশে দখল কায়েম করার জন্য তারা সন্ত্রাসবাদকেই প্রধান হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করছে। যেখানে প্রশিক্ষকরা আমলাদের জানিয়েছেন মূর্তিপুজো বন্ধ করার লক্ষ্যে ভিড়ে ঠাসা মণ্ডপে সশস্ত্র হামলা বা বিস্ফোরণই যথেষ্ট। এছাড়াও, আরও অন্যান্য পরিকল্পনা ও সামনে আনা হয়। এমতাবস্থায়, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে গোয়েন্দা আধিকারিকরা জানিয়েছেন, হাসিনা সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকাকালীন এই উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। কিন্তু, সেই দেশের নজরদারি সংস্থাগুলিতেও জঙ্গিদের অনুগত থাকায় এই খবর সরাসরি সরকার পর্যন্ত পৌঁছয়নি। কিন্তু, হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেই জঙ্গিরা পূর্ণ উদ্যমে “বৃহৎ বাংলা” খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে। আর সেই কারণেই ইউনূস সরকারের আমলে শয়ে শয়ে জঙ্গি বাংলাদেশে (Bangladesh) ছাড়া পাচ্ছে বলেই মনে করেছেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা। আর এইভাবেই তারা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে নিজেদের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে চাইছে।
দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও: