ভূত চতুর্দশী আসলে কি,জেনে নিন কিছু অজানা তথ্য!

 

বাংলা হান্ট ডেস্ক : আজ রাত পোহালেই কাল ভূত চতুর্দশী। ভূত চতুর্দশীর দিনে বাঙালিরা ১৪ রকমের শাক খেয়ে ও বাড়িতে ১৪ টি প্রদীপ জ্বেলে এই দিনটিকে পালন করে। বলা হয় এদিন মৃত প্রেতাত্মারা পৃথিবীতে আসেন। এটা হিন্দুদের “হ্যালুইন উৎসব” । বিদেশে হ্যালুইন উৎসব পালন করা হয় মিষ্টিকুমড়োর ওপরের অংশ কেটে সমস্ত বের করে মিষ্টিকুমড়োর মধ্যে চোখ মুখ আঁকিয়ে তার মধ্যে মোমবাতি জালিয়ে রাখা হয়।

মানা হয় এতে প্রেতাত্মারা খুশী হন। এছাড়া এদিন ভূতের সাজসজ্জা সেজে আনন্দ উৎসব করা হয়। হিন্দুদের উৎসব একেবারে অন্য নিয়মে। চৌদ্দ শাক খেয়ে দিনটি পবিত্র ভাবে পালন করে সন্ধ্যায়মৃত পূর্বপুরুষ দের উদ্দ্যেশে সাতটি প্রদীপ দেওয়া হয়। একে “যম প্রদীপ” বলে। বলা হয় এতে যমরাজ প্রসন্ন হয়ে মৃত ব্যাক্তির আত্মাকে মুক্ত করেন । সমস্ত পৃথিবীর মানুষ দের মতো হিন্দুরাও বিশ্বাস করে এই দিনটি তে মৃত আত্মারা পৃথিবীতে নেমে আসেন। যাই হোক ভূত চতুর্দশীর একটি অন্য রকম অর্থ দাড়ায় ।

ভূত চতুর্দশীর পর দিন দীপান্বিতা অমাবস্যা।
মহাশক্তি মা কালীর পূজার দিন । আমাদের এই দেহ পঞ্চভূতের সমষ্টি। আকাশ, ভূমি, জল, অনল, পবন। দেহান্তে শ্মশানে দেহ দাহ হলে এই শরীর পঞ্চভূতে বিলীন হয় । সুতরাং এই পঞ্চভূতের শরীর কে নশ্বর জ্ঞানে এই দিনটি পবিত্র ভাবে থেকে চৌদ্দ শাক ভক্ষণ করে, সন্ধ্যায় ধর্মরাজের নামে প্রদীপ উৎসর্গ করে পর দিবস মা কালীর উপাসনায় ব্রতী হবার শিক্ষে দেয়। তাই এই দিন ভূত চতুর্দশী নামে খ্যাত । প্রেতাত্মার কথা বলতে এখানে দেহের নশ্বর মূর্তির কথাই তুলে ধরা হয়েছে ।

সনাতন ধর্ম বা ভারতীয় আন্চলিকতায় বিভীন্ন অশরীরি আত্মার কথা পাওয়া যায় তেমনী পুরাণ গুলোতে ভূত পিশাচ বেতাল ডাকিনী ইত্যাদি রকম নাম পাওয়া যায় । সকল পূজার পূর্বে ভূতের নামে পূজা দিয়ে তাদের তারাতে হয় নাহলে পূজায় বিঘ্ন ঘটে ।

IMG 20191025 204642

ভূত কে বিস্বাস না করার কিছু নেই কারণ, সকল আত্মাই স্বর্গ বা নরকে যেতে পারে না । বিভীন্ন কারণে তারা পৃথিবীতে থেকে যায় । কেউ বা অতৃপ্ততার জন্য কেউবা অপঘাতে মৃত্যুর জন্য । ভূত যোনীতে থাকা আত্মারা পৃথিবীতে থেকেও নরক যন্ত্রনা ভোগ করে । যখন তারা এই পৃথিবীর মানুষদের সুখে থাকতে দেখে তখন তারা তাদের সুখকে বিঘ্ন ঘটাতে চায় ।

কিন্তু মনে রাখতে হবে টিভি সিনেমার ভূত আর বাস্তব ভূত একদম আলাদা । কারণ, ভূত কারো ক্ষতি করতে পারে না, মানুষ ভূত কে অনুভব করে নিজেদের মধ্যই একটা চিত্র তৈরী করে নেয় আর তার বর্ণনা দেয় । আপনাদের অবগতির জন্য বলতে হচ্ছে, পরমাণুর ১০লক্ষ ভাগের সমান একটি আত্মা সুতরাং তার কোন দেহ বা রুপ চর্মচক্ষুতে দেখা অসম্ভব ।

তাই অঝতা ভূতের ভয় পাবেন না, ভূতের মত কিছু অনুভব করলে মন্ত্র জপ করুণ। দশমহাবিদ্যার নাম, গায়েত্রী, হরেকৃষ্ণ নাম ইত্যাদি জপ করলে মানসিক ভাবে সাহস পাবেন যে ভগবান আছে ।

সম্পর্কিত খবর