গেলেই ৪০ কোটি টাকা! গোয়ায় কংগ্রেস বিধায়কদের টোপ বিজেপির দাবি সনিয়াদের

বাংলাহান্ট ডেস্ক : কয়েক দিন আগেই পদ্ম ফুটেছে মহারাষ্ট্রে (Maharashtra)। এমনিতেই গেরুয়া ঝড়ে গোয়ায় (Goa) উড়ে গেছে কংগ্রেস (Congress)। তারপরেও যে কয়েকজন এমএলএকে (MLA) নিয়ে টিম টিম করে বাতি জ্বলছিল কংগ্রেসের সেখানেও ভাগ বসানোর অভিযোগ উঠলো বিজেপির বিরুদ্ধে। জানা যাচ্ছে দিগম্বর কামাত (Digambar Kamat) ও মাইকেল লোবো (Michel Lobo), গোয়ার এই দুই শীর্ষ কংগ্রেস নেতা দলের বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ‘ষড়যন্ত্র’ করছিল বলে অভিযোগ জানায় কংগ্রেস। বিশেষ কিছু মারফত খবর, প্রত্যেক কংগ্রেস বিধায়ককে বিজেপি ৪০ কোটি টাকা করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। আজ কংগ্রেস নেতৃত্ব গোয়ায় দলের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধেই এই অভিযোগ জানিয়েছেন।

গোয়ায় এখন বিজেপি সরকার। তারপরও বিজেপি গোয়ায় কংগ্রেসের ১১ জন বিধায়কের মধ্যে বেশিরভাগকেই ভাঙিয়ে নেওয়ার যড়যন্ত্র করেছিল বলে কংগ্রেস নেতৃত্ব অভিযোগ করে। এই ষড়যন্ত্রে কংগ্রেসের যে দু’জন বিধায়ক নেতৃত্ব দেন তাঁরা দু’জনই কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের সঙ্গী। এক জন কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন বলে পরিচিত এবং অন্য জন বিধানসভায় কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা।

এআইসিসি-তে গোয়ার ভারপ্রাপ্ত নেতা দীনেশ গুন্ডু রাও (Dinesh Gundu Rao) দলের দুই নেতার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’-র অভিযোগ তুলে মাইকেল লোবোকে বিরোধী দলনেতার পদ থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছে। তিনি দাবি করেন, বিজেপির হয়ে কামাত এবং লোবোর কংগ্রেস ভাঙানোর প্রচেষ্টা আটকানো গেছে। ১১ জনের মধ্যে ৬ জন বিধায়ক রয়েছেন কংগ্রেসের সঙ্গেই। কিন্তু কংগ্রেস জানাচ্ছে, বেশ কিছু কংগ্রেস নেতা ইতিমধ্যেই বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্তের (Pramod Sawant) সঙ্গে দেখা করে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন। জানা যাচ্ছে গতকাল সন্ধ্যায় লোবো ও তাঁর স্ত্রী সাওয়ান্তের সঙ্গে দেখা করেন। কংগ্রেস সূত্র সন্দেহ করছে, পাঁচ জন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল জানান, গোয়ার পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে সাংসদ মুকুল ওয়াসনিককে (Mukul Wasnik) দূত হিসাবে পাঠাচ্ছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)।

এই ষড়যন্ত্র প্রকাশ্যে আসে শনিবার রাতেই। কংগ্রসের পরিষদীয় দলের বৈঠকে দিগম্বর কামাত উপস্থিত ছিলেন না। রবিবার পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়। সেখানেও ১১ জন বিধয়কের মধ্যে হাজির হন মাত্র পাঁচ জন। ফলে বৈঠক বাতিলও করতে হয়। এআইসিসি নেতা রাওয়ের মন্তব্য করেন, ‘দিগম্বর কামাত ও মাইকেল লোবো, বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া করে কাজ করছিলেন। কামাতের বিরুদ্ধে বিজেপি সরকার এত মামলা করেছে যে তিনি এখন নিজেকে বাঁচাতে চাইছেন। অন্য দিকে লোবো ক্ষমতা ও পদের জন্য দল ভাঙাচ্ছিলেন।’

কংগ্রেসের বিধায়ক ভাঙিয়ে বিজেপির লাভ কী?

কংগ্রেস নেতারা শনিবার থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দলের মধ্যে ভাঙনের কথা অস্বীকার করেন। এমনকি লোবোও জানান, ‘এ সব বিজেপির রটনা। কেউ কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যাচ্ছেন না।’ কংগ্রেসের দাবি, কামাত-লোবোর পরিকল্পনা করে কংগ্রেসের বিধায়ক দলের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া করাচ্ছে। এর ফলে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হবে না। এবং বিধায়ককেই পদত্যাগ করতে না হয়। অংক বলছে, গোয়াকে বিরোধী শূন্য করে দিয়ে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) গোয়ার দুটি আসনেই জয় নিশ্চিত করতে চায় বিজেপি।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর