বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডে (RG Kar Case) দোষী সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কলকাতার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। আদালতের এই সিদ্ধান্তে আশাহত হয়েছেন নির্যাতিতার পরিবার। প্রথমত শুরু থেকেই অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। পাশাপাশি তাঁদের দাবি তাঁদের মেয়ের মৃত্যুর জন্য সঞ্জয় একমাত্র দোষী নয়। আরও অনেকেই এই ঘটনার সাথে যুক্ত আছে বলেই অনুমান করছেন তাঁরা। একইসাথে সিবিআই তদন্ত নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। শিয়ালদহ আদালতে আরজি করের ধর্ষণ-খুনের মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন কয়েকটি বিষয় পরিবারের তরফে লিখিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। রায়ের কপিতে সেই বিষয়গুলির ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় শিয়ালদা-আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস জানিয়েছেন, নির্যাতিতার পরিবারের তরফে করা কয়েকটি দাবি ‘ভিত্তিহীন’।
আরজি কর কাণ্ডে (RG Kar Case) তিলোত্তমার বাবার ২ দাবি ‘ভিত্তিহীন’ বলল আদালত
রায়ের কপিতে জাস্টিস অনির্বাণ দাস জানিয়েছেন আরজিকরের তৎকালীন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ নিজে থেকে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি বলেই তাকে দোষী বলে চিহ্নিত করা যায় না। এপ্রসঙ্গে নির্যাতিতার পরিবারের তরফে যে বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে সেটিকে সরাসরি ‘ভিত্তিহীন’ বলে চিহ্নিত করেছেন তিনি।
সন্দীপ ঘোষ কে নিয়ে কি বক্তব্য আদালতের?
বিচারক দাস জানিয়েছেন, ‘অভিযোগকারী একটি ভিত্তিহীন প্রশ্ন করেছেন। তিনি বলেছেন নির্যাতিতার বাবা ও মায়ের সঙ্গে দেখা করতে তৎকালীন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ নিজের চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসেননি। সেটি প্রমাণ করছে তিনি দোষী। নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছিলেন কয়েকজন তাঁদের প্রিন্সিপালের ঘরে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিলেন’। একই সাথে শিয়ালদহ আদালতের বিচারক জানিয়েছেন, ‘নির্যাতিতার পরিবারের দাবি ছিল তৎকালীন প্রিন্সিপাল যেন নিজে এসে তাঁদের সাথে দেখা করেন। আমার মতে সেই বিষয়টাও প্রিন্সিপালের ওপর কলঙ্ক ফেলতে পারেনা যে তিনি দোষী’।
আরও পড়ুন: আর পালাবার পথ নেই সঞ্জয়ের! আজই সুপ্রিম কোর্টে সব ‘ফাঁস’ করবেন আইনজীবী করুণা নন্দী
নির্যাতিতার পরিবারের আরো একটি দাবিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে জানিয়েছেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক। রায়ের কপিতে তিনি জানিয়েছেন,’আমি জানিনা কেন অভিযোগকারীদের আইনজীবী দাবি করেছেন যে জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করার কাজটা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে করা উচিত ছিল। সঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় এটা ভিত্তিহীন প্রশ্ন।’
নির্যাতিতার আইনজীবীর প্রশ্ন আলীক ও কাল্পনিক
জাস্টিস দাস ওই কপিতে নির্যাতিতার পরিবারের উত্থাপন করা কয়েকটি বিষয় নিয়েও জবাব দিয়েছেন। নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীর ক্ষেত্রে বিচারক বলেছেন, যে তথ্য প্রমাণ এবং বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়েছে, সেটার ভিত্তিতে অভিযোগকারীর আইনজীবী উপযুক্ত ভাবে প্রশ্নগুলো উত্থাপন করতে পারেননি। কয়েকটি ‘অলীক এবং কাল্পনিক প্রশ্ন’ করা হয়েছিল। যা পুরো প্রচেষ্টাকে আরো হালকা করে তুলেছে।’ সেই সাথে তিনি জানিয়েছিলেন ওই নথিকে লিখিত নোট হিসেবে বিবেচনা করা যাবে কিনা তা নিয়েও তিনি দ্বিধাগ্রস্ত।