বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাইকোর্টের পর সুপ্রিম কোর্ট। নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির জেরে এসএসসি ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত (SSC Recruitment Scam)। যার জেরে এক ধাক্কায় চাকরি গিয়েছে ২৬০০০ জনের। এত বড় দুর্নীতি সামনে আসার পর অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল, রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি তড়িঘড়ি পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়দানে নেমেছেন রাজ্যের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী সহ শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। তবে এই সময়ে সব থেকে বেশি উঠছে যার আমলে এই দুর্নীতি সেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) নাম। যদিও তিনি এখন জেলবন্দি।
নিয়োগ দুর্নীতিতে গত বছরই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন তৃণমূলের কুণাল-SSC Recruitment Scam
২০২২ থেকে নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) অভিযোগে জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এখনও তার জেলমুক্তি হয়নি। চাকরি বাতিল কাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে সম্প্রতি শোনা গিয়েছে পার্থর কথা। অনেকেই ইশারায় বুঝিয়ে দিচ্ছেন ‘দোষী’ পার্থ। আর এরই মাঝে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) বিস্ফোরক দাবি করা এক ভিডিও সামনে।
বেশ কিছুসময় আগের কথা। এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জোর গলায় কুণাল দাবি করেছিলেন, ‘চাকরি বিক্রির কথা দল জানত।’ রাজ্যে দেদারে হয়েছে চাকরি বিক্রি, লাগাতার সর্বস্তরে হয়েছে নিয়োগে দুর্নীতি। আর সেই খবর অনেক অনেক আগে থেকেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে ছিল। এমনটাই দাবি করে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন তৃণমূলের কুণাল।
তিনি স্পষ্ট বলেন, “রাজ্যে চাকরি বিক্রি হচ্ছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা তার নাম করে টাকা তোলা হচ্ছে, আগে থেকেই দলের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল সেই খবর। এমনকী ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগেও চাকরি বিক্রির কথা জানত দল।” সেই সময় কুণালের দাবি, ‘শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির কথা দল জানত বলেই ২০২১ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে শিক্ষামন্ত্রী করা হয়নি। যা নিয়ে পার্থ গোঁসাও করেছিল। পার্থ একা নন, তার মত আরও একাধিক হেভিওয়েট নেতা চাকরি বিক্রির সঙ্গে যুক্ত। যারা এখন বহাল তবিয়তে দলে রয়েছে।’
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কুণাল বলেন, “আমি তখন প্রেসিডেন্সি জেলে বসে আছি। এক অফিসার আরেকজন ওয়ারডারকে নিয়ে এলেন। বিষয়টা ছিল, শিক্ষকের চাকরি হচ্ছে, বড়বাবু একটা সাহায্য করতে হবে। তৃণমূলের এক নাম করা নেতা সাড়ে সাত লক্ষ টাকা চেয়েছেন। আমার আত্মীয় ৫ লাখ জোগাড় করতে পেরেছে, আপনি যদি একটা চিরকুট লিখে দেন তাহলে যদি বাকিটা মুকুব হয়ে যায়।” কুণাল ঘোষ সাফ বলেন, তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায় নন।
আরও পড়ুন: টানা ঝড়-বৃষ্টি! গরম কাটিয়ে আজ ভিজবে দক্ষিণবঙ্গের ৬ জেলা: আবহাওয়ার খবর
কুণাল বলেছিলেন, “চাকরি বিক্রি করে কেউ না কেউ অন্যায় করেছে। সেই লোক এখনও মন্ত্রিসভায় নিজের পদে বহাল আছে। চাকরি বিক্রিতে যুক্ত তিনি এখনও রাজ্যের মন্ত্রী।” তৃণমূল নেতা দাবি করেন, ‘আজ নিয়োগ দুর্নীতির জেরে যে পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, সেটা আগে ছিল না।’
কুণালের কথায়, ‘SSC’র সদিচ্ছা থাকলে আগেই এই সমস্যার সমাধান হত। কিন্তু সেসব না করে কেউ কেউ এখনও নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’