কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুখ্যমন্ত্রী ‘ডি.লিট” সম্মান পাওয়ার সময় উপাচার্য ছিলেন আলাপন পত্নী সোনালী

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রাক্তন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘর্ষ চরমে। ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার ৫ পৃষ্ঠার কড়া চিঠিতে কেন্দ্রকে যে বক্তব্য জানিয়েছিলেন তা খারিজ করেছে কেন্দ্র। তবে এই মুহূর্তের স্মৃতির পাতায় উঁকি দিলে উঠে আসে অন্য একটি গল্প। ২০১৭ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডিলিট সম্মানে সম্মানিত করেছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। সে সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উপাচার্য নির্বাচন নিয়েও কম জল ঘোলা হয়নি। কারণ প্রথমত তিনি ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। যেহেতু রেজিস্টার একটি প্রশাসনিক পদ এবং অন্যদিকে উপাচার্য একটি শিক্ষকতার পদ। সেই কারণেই শুরু হয় বিতর্ক। সাধারণত রেজিস্ট্রার থেকে কেউ সরাসরি উপাচার্য পদে উন্নীত হতে পারেন না। তাই এ বিষয়ে একটি মামলাও করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে ডিলিট দেওয়ায় যথেষ্ট সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ডিলিট দেওয়া হয়েছিল সামাজিক সেবামূলক কাজ এবং সাহিত্যকর্মের জন্য।

কিন্তু এই নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক শুরু করেন বিরোধীরা। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছিলেন,  “যে বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকার অনুদান দিচ্ছে, সেই সরকারেরই প্রধানকে বিশ্ববিদ্যালয় ডিলিট দিচ্ছে, অদ্ভুত ব্যাপার!” প্রশ্ন তোলা হয়েছিল বাম মনোভাবাপন্ন শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুটার তরফেও তারা জানিয়েছিলেন, “একটা সময় তারাই মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকা জ্যোতি বসুকে বিশেষ আইনি সম্মান দেওয়া নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমালোচনা করেছিলেন। এখন তৃণমূল সর্মথকরা কি বলবেন?”

প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্য বিজেপির নেতা দিলীপ ঘোষও। তার মতে, “সরকার এমন একজনকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করেছে, যিনি কোনও দিন কলেজে পড়াননি। তিনিও প্রতিদানে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন!” যদিও বিশ্ববিদ্যালয় তরফে জানানো হয়েছিল সর্বসম্মতিক্রমেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা। তবে ডিলিট সম্মান গ্রহণের সময় এই লাঞ্ছনা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি জানিয়েছিলেন, “আমার জীবনটা অসম্মানের, অবহেলার, সংগ্রামের। কেউ যদি আমায় সম্মানিত করেন তা নিয়েও আমায় কম অসম্মানিত হতে হয় না।” একইসঙ্গে এই সম্মানকে জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার বলেও মেনে নিয়েছিলেন তিনি।

Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর