বাংলাহান্ট ডেস্ক : স্কুল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগের (School Service Commission, Teachers Recruitment Scam) দুর্নীতির তদন্তে নেমে অবশেষে প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) শনিবার সকালেই গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটর (ED)। পার্থবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এখনও পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি। অভিনেত্রী ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে ২১ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তার সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যোগাযোগের প্রমাণ এখনও পাননি ইডির কর্মকর্তারা।
কয়েকদিন আগে পর্যন্তও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) এই বিষয়ে প্রশ্ন করেলে পার্থবাবু বলতেন, ‘এ সব অভিযোগের কোনও ভিত্তিই নেই। আমি কি টাকার জন্য রাজনীতিতে এসেছি নাকি? বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বড় চাকরি ছেড়ে এখানে এসেছি, তা এই সব দুর্নীতি করার জন্য নয়।’
পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে এক সময়ে কাজ করতেন, সে ব্যাপারে তাঁর গর্বের অন্ত ছিল না। বাংলার রাজনীতিতে অনেকেই ছিলেন বা রয়েছেন যাঁদের অনেকেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেও পেশা ও নেশা দুটোই ছিল রাজনীতি। পৃথক উপার্জনের ব্যবস্থা কিছু ছিল না। সিপিএম আমলেও অনেক উচ্চ শিক্ষিত নেতা মন্ত্রী রোজগার বলতে ছিল পার্টি থেকে দেওয়া সামন্য ভাতা। সম্ভবত সেই কারণেই পার্থর বেশ একটা অহংকার ছিল এই ব্যাপারে।
নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র ছিলেন পার্থবাবু। তার পর আশুতোষ কলেজ থেকে ইকোনমনিক্স নিয়ে স্নাতক পাশ করেছেন। তার পর ম্যানেজমেন্ট পড়েছিলেন আইএসডব্লিউবিএম থেকে। তিনি চাকরি করতেন অ্যান্ড্রু ইউলে। তাঁর স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ও অ্যান্ড্রু ইউলেতে চাকরি করতেন। কয়েক বছর আগেই প্রয়াত হয়েছেন বাবলি চট্টোপাধ্যায়।
কিন্তু মজার বিষয় হলো, যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বহু কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে তার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনচর্যার কিন্তু কোনও মিলই ছিল না। নাকতলায় নিজের বাড়িতেই থাকতেন তিনি। সেই বাড়ি বিরাট কিছু বিলাসবহুলও নয়। তার বাড়ির ভিতরও ছিল সাধারণ মানের। চড়তেন সরকারি গাড়িতে। বছর খানেক আগে একটা ইনোভা গাড়ি কেনেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা দাবি তুলেছেন, পার্থবাবুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তবে আগে অনেক বারই দেখা গিয়েছে যে রাজনীতিকদের দুর্নীতির সঙ্গে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনের বিলাসিতার কোনও সম্পর্কই নেই। এখন দেখার এই মামলার জল কতদূর গড়ায়।