বাংলা হান্ট ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনের (West Bengal Panchayat Election) ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। কে দখল করবে গ্রাম বাংলার মানুষের মন তা নিয়ে শুরু হয়ে তর্জা। উঠে আসছে একাধিক তত্ত্বও। অধিকাংশের মতে শাসক দল তৃণমূল (Trinamool Congress) এখনও গ্রাম বাংলায় অপ্রতিরোধ্য। আবার একাংশের মতে সাম্প্রতিক কালের দুর্নীতির একটা মারাত্মক প্রভাব পড়েছে মানুষের মনে। তাই, পঞ্চায়েতে তৃণমূলের কাজটা অতটাও সহজ হবে না। অনেকেই আবার বামেদের (Communist Party of India) ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে বেশ আশাবাদী।
এবার এই গ্রাম বাংলা দখলের লড়াইয়ের মধ্যেই বাজতে শুরু করেছে লোকসভা নির্বাচনের সুর। আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে কার্যত এটাই রাজ্যের সেমিফাইনাল। গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে বড়সড় ধাক্কা দিয়ে নজিরবিহীন সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। ২০১৯ সালে রাজ্যে তখন বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৩। তবে লোকসভায় ১৮টি আসন ছিনিয়ে নিয়েছিল তারা। যদিও ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সেই ফল ধরে রাখতে পারেনি পদ্ম শিবির। ১০০ আসনও পার করতে পারেননি বিশ্বের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। এবার মরিয়া হয়ে উঠবে বিজেপি তা বলাই বাহুল্য।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির চমকপ্রদ সাফল্যের অন্যতম কারণ ছিল ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট। স্থানীয় নির্বাচনে শাসকদলের দৌরাত্ম মেনে নিতে পারেননি বহু ভোটার। আর তারই প্রতিফলন ঘটেছিল লোকসভার ব্যালটে। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটেও রক্ত ঝরতে শুরু করেছে। শাসক-বিরোধী মিলিয়ে বহু মানুষের প্রাণ চলে গেছে ইতিমধ্যেই। এই পরিস্থিতিতে এখন যদি রাজ্যে লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে কোন দলের ঝুলিতে কটি আসন যাবে? জনমত সমীক্ষা বলছে, এই মুহূর্তে রাজ্যে লোকসভার ৪২টি আসনে ভোটগ্রহণ হলে ঘাড়ে ঘাড়ে লড়াই চলবে বিজেপি ও তৃণমূলের।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দুরন্ত ফল করলেও বাংলায় সেভাবে সংগঠন গুছিয়ে উঠতে পারেনি তারা। কিছুটা ‘মোদি ম্যাজিক’ এবং কিছুটা ‘প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা’ থেকে গতবার ভালো ফল করেছিল বিজেপি। সেখানে সিপিএমের ঝুলিতে এসেছিল শূন্য। কংগ্রেসের একমাত্র সলতে হয়ে জ্বলছিলেন অধীর চৌধুরী। এখনই যদি রাজ্যে নির্বাচন হয়, তাহলে পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে ২০১৯ সালেরই। তৃণমূল পেতে পারে ২০ থেকে ২২টি আসন, বিজেপি পেতে পারে ১৯ থেকে ২০টি আসন। এদিকে বামেরা পেতে পারে ১ থেকে ২ টি আসন এবং কংগ্রেসের ঝুলিতে যেতে পারে ১ থেকে ২টি আসন।
সম্প্রতি পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে একটি জনমত সমীক্ষা প্রকাশ করেছিব এবিপি আনন্দ। সেই সমীক্ষা করেছিল সিভোটার। সেই সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজ্যের ২০টি জেলা পরিষদের মধ্যে তৃণমূলের দখলে যাবে ১৫টি। আসনের ভিত্তিতে ৯২৮টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে তৃণমূল পেতে পারে ৬৮৪টি। বিজেপি পেতে পারে ১৭৫ থেকে ২৭৫টি। বাম-কংগ্রেস ৫৭ থেকে ১২০টি পেতে পারে।