পুকুর কাটতে গিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে উদ্ধার বহু প্রাচীন মূর্তি! শোরগোল এলাকায়

   

বাংলা হান্ট ডেস্ক: সরকারি একশো দিনের প্রকল্পের কাজে পুকুর খনন করতে গিয়ে এবার দুষ্প্রাপ্য এক মূর্তি উদ্ধার হল পশ্চিম মেদিনীপুরে। কয়েকদিন আগেই পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে উদ্ধার হয়েছিল ঐতিহাসিক মূর্তি। এবার সেই রেশ বজায় রেখেই পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনেও উদ্ধার করা হয়েছে এক প্রাচীন নারীমূর্তি। গত রবিবার এই মূর্তিটি উদ্ধার করা হয় মনোহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাকরাজিত গ্রামে।

সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, কাকরাজিত গ্রামের বিখ্যাত মহাপ্রভু মন্দির সংলগ্ন কুন্ডু পুকুর খনন করতে গিয় উপস্থিত শ্রমিকরা একটি ভগ্ন নারীমূর্তি উদ্ধার করেন। প্রথমিকভাবে গবেষকদের একাংশ মনে করছেন যে, উদ্ধার হওয়া ওই মূর্তিটি পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ শতকে তৈরি। যদিও, ভগ্ন মূর্তিটির গঠনশৈলী দেখে অনেকে আবার এটি সপ্তম কিংবা অষ্টম শতকে নির্মাণ করা হয়েছে বলে মনে করছেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার সীমান্তবর্তী এলাকা দাঁতন ঐতিহাসিকভাবে অত্যন্ত প্রসিদ্ধ একটি এলাকা। এখানে ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে প্রাচীন বৌদ্ধ মহাবিহার। মোগলমারির এই বৌদ্ধ বিহার প্রত্নতাত্বিকদের কাছেও এক দিগন্ত খুলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, এখানকার মাটি খুঁড়ে পাওয়া গিয়েছে রেবন্তের মূর্তিও। এক কথায় দাঁতনের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য সব ঐতিহাসিক নমুনা।

যদিও, সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া মূর্তিটি কোন সময়কালের তা নিশ্চিতভাবে গবেষণার পরেই জানা যাবে। ইতিমধ্যেই এই গ্রাম থেকে বিভিন্ন সময়ে পাওয়া বিষ্ণুমূর্তি সহ একাধিক মূর্তি গাছের তলায় রেখে ভক্তিভরে পুজো করে আসছেন এলাকাবাসীরা। এই প্রসঙ্গে গবেষক অতনু নন্দন মাইতি জানিয়েছেন, “সমগ্ৰ দাঁতন জুড়েই রয়েছে নানান ইতিহাসের নিদর্শন। তবে, এই মূর্তিটি সম্ভবত কোনো দেবীর মূর্তি। কারণ এই মূর্তিটি ভারী অলংকারে ভূষিতা রয়েছেন। পাশাপাশি, মাথায় রয়েছে একটি মুকুটও। স্বাভাবিকভাবেই ভগ্নপ্রায় এই মূর্তিটি কোনো দেবীর মূর্তি হতে পারে।”

WhatsApp Image 2022 05 02 at 6.39.16 PM

এছাড়াও, পরবর্তীকালে খননের ফলে এই মূর্তির বাকি অংশটুকু পাওয়া যেতে পারে বলেও আশাবাদী তিনি। তবে, এই সমস্ত ঐতিহাসিক নিদর্শন যাতে প্রশাসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে সেই দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে গত সপ্তাহে পরপর ছ’বার মঙ্গলকোট থেকে একাধিক প্রাচীন দেব-দেবীর মূর্তি উদ্ধার হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই এলাকার খেরুয়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া অজয় নদ থেকে মাছ ধরার সময় একাধিক মূর্তি জেলেদের জালে উঠে আসে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে দু’টি বিষ্ণু মূর্তি সহ একটি সূর্য মূর্তিও।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর