বিশ্বকাপের আগে কোনওদিন সুযোগই পাননি, কাল CR7-এর বদলে মাঠে নেমে ইতিহাস লিখলেন র‍্যামোস

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: কাল সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে পর্তুগালের প্রথম একাদশে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে না দেখে অনেকেই আশ্চর্য হয়েছিলেন। ‘শেষ ১৬’ পর্যায়ে সুইজারল্যান্ডের মতো অসাধারণ ডিফেন্সিভ ক্ষমতা সম্পন্ন দল, যাদের বিরুদ্ধে রীতিমতো ঘাম ঝরিয়ে জিততে হয়েছিল ব্রাজিলকে, তাদের বিরুদ্ধে দলের সবচেয়ে বড় তারকাকে বেঞ্চে রেখে দলগঠন! কোনও অঘটন ঘটলে পর্তুগিজ কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোসকে অনেক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হতো। কিন্তু তিনি ঝুঁকি নিয়েছিলেন এবং তার জন্য বিশাল পুরস্কারও পেয়েছেন।

সুইজারল্যান্ড খুব সম্ভবত ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে মাথায় রেখেই নিজেদের পরিকল্পনা তৈরি করেছিল। কিন্তু যখন দেখা গেল যে রোনাল্ডো মাঠে নেই তখন তাদের পরিকল্পনা বেশ কিছুটা আঘাত পেল। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নায়ক হয়ে উঠলেন বেনফিকার তরুণ স্ট্রাইকার গঞ্জালো র‍্যামোস। প্রথমার্ধে একটি দুরহ কোণ থেকে অসাধারণ ফিনিশ করে পর্তুগালকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। গোল করেছিলেন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার পেপেও।

দ্বিতীয় থেকে দুই গোলে পিছিয়ে পড়া সুইজারল্যান্ড যখন সকলকে নিয়ে আক্রমণ করতে উঠলো তখন তাদের মাঝমাঠ ও রক্ষণে তৈরি হল প্রচুর ফাঁকা জায়গা। সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগালেন পর্তুগিজ ফুটবলাররা। সুযোগ কাজে লাগালেন র‍্যামোসও। নিজে করলেন দুটি গোল, একটি গোল করালেন। কয়েক ঘন্টা আগেও যিনি একটি অপরিচিত নাম ছিলেন সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের কাছে, তারাও এখন তার নামের জয়গান করছেন।

goncalo ramos

কিন্তু কে এই র‍্যামোস? সত্যি কথা বলতে ২১ বছর বয়সেই এই তরুণ তারকা ফুটবলার বিশ্বকাপের আগে কোনওদিনও পর্তুগালের জার্সি গায়ে চাপানোর সুযোগ পাননি। কিন্তু বিশ্বকাপের কয়েকদিন আগে পর্তুগালের তারকা লিভারপুলের ফরোয়ার্ড দিয়েগো জোটা চোটের জন্য ছিটকে যাওয়ায় সুযোগ পান তিনি। সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথমবার পর্তুগালের হয়ে কোনও ম্যাচে শুরু থেকে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। তাকে যখন বলে নেওয়া হয়েছিল তখন অনেকেরই মনে তাকে নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু এবার থেকে হয়তো আর কেউই তাকে নিয়ে কোন নেতিবাচক কথা বলবে না।

পর্তুগালের বিখ্যাত ক্লাব বেনফিফার ইয়ূথ অ্যাকাডেমী থেকে উঠে আসা র‍্যামোস চলতি পর্তুগিজ লিগে বেনফিকার জার্সি গায়ে ১১ ম্যাচে ৯ গোল করে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। পর্তুগালের অলহাও-তে জন্মগ্রহণ করা এই স্ট্রাইকার বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি স্বরূপ নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে একটি প্রীতি ম্যাচে প্রথমবার পর্তুগালের জার্সি গায়ে চাপানোর সুযোগ পান। কাল ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলের পর দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে হ্যাটট্রিক করে ম্যাচের ফেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “আমি কোনদিনও স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে কোন নকআউট ম্যাচে পর্তুগাল কে ম্যাচ জেতাবো। খুব ভালো লাগছে।” রোনাল্ডো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “রোনাল্ডো আমার আদর্শ। ও আমাদের নেতা এবং দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তিত্ব ও ফুটবলার।”


Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর