বাংলাহান্ট ডেস্কঃ মাওনেতা হিদমা। নামটা মোটেও পরিচিত নয়। তবে এই অপরিচিত হিদমার মাথার দাম সম্প্রতি ৪০ লক্ষ টাকা ঘোষণা করেছে গোয়েন্দারা। আর এই মাওনেতার খোঁজে তল্লাশিতে নেমেই রবিবার ২৩ ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন। জানা গিয়েছে, বিজাপুরে গত কয়েকদিন ধরে লুকিয়ে ছিল মাওনেতা হিদমা। আর সেই খবর গোপন সূত্রে পেয়ে রবিবার মাও অভিযানে নামে সিআরপিএফ, বিশেষ কোবরা বাহিনী, ছত্তিশগড় পুলিশের ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ কার্ড সহ আরও কয়েকটি বাহিনীর প্রায় ১৫০০ জওয়ান। খবর অনুযায়ী হিদমার লুকিয়ে থাকার সেই খবর আদতে ছিল জাওয়ানদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা।
এই ফাঁদে ফেলার মাস্টারমাইন্ড হিদমার উৎপত্তি নয়ের দশকে। একবারে বাল্যবেলায় মাও জগতে হাতে খড়ি তাঁর। পরে সেখান থেকে সময়ের সাথে সাথে গেরিলা বাহিনীর দক্ষ প্রশাসক নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে এই মাও নেতা। তার হাত দিয়েই তৈরি হয়েছে মহিলা সহ একাধিক গেরিলা নেতা। সুকমা জেলার জনজাতি অধ্যুষিত পুবর্তী গ্রামের বাসিন্দা তিনি। বছর চল্লিশের এই নেতা মাওবাদীদের দণ্ডকারণ্য বিশেষ আঞ্চলিক কমিটির সদস্য। যার খোঁজ বিগত কয়েক বছর ধরেই ছিল ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে। তবে তাঁর টিকিও ছোঁয়া সম্ভব হয়নি এখনও পর্যন্ত।
এই নেতার হাতেই বদলেছে মাওবাদীদের রণকৌশল। তৈরি হয়েছে নয়া নকশা। মাদভী হিদমা (Madbhi Hidma) সুকুমার জঙ্গলের ‘ট্যাক্টিক্যাল কাউন্টার অফেন্সিভ ক্যাম্পেনে’র’ মাস্টারমাইন্ড। বিজাপুরের জঙ্গলে সেই ‘টিসিওসি’ই অনুসরণ করেছিল মাওবাদীরা। কারণ, খবর অনুযায়ী জানা গেছে, এক জওয়ান নিজের বন্দুকের ম্যাগজিন বদলানোর সময় মুহূর্তের মধ্যে সেখানে হাজির হয় এক মাওবাদী। প্রথমেই জওয়ানের হাত কেটে দেয় ধারাল অস্ত্র দিয়ে, তারপরই তাঁর উপর চালানো হয় এলোপাথাড়ি গুলি। এতটাই কাছ থেকেই ওই দিন জওয়ানদের উপর এই হামলা চালানো হয়। তাকেই বলা হয় ‘টিসিওসি’।
দ্রুত রণকৌশল বদলে ফেলায় পারদর্শী এই মাওনেতা মাদভী হিদমার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক খুনের অভিযোগ যা নিয়ে অনেক আগে থেকেই তদন্ত করছে এনআইএ। মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির ২১ জনের সদস্যদের মধ্যে হিদমা (Hidma) সর্বকনিষ্ঠ। আর সেই নেতার লুকিয়ে থাকার খবর পেয়েই চলে এদিনের মাও অভিযান। আর তাতে মাওবাদীরা (Naxal) যেভাবে লড়াই এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, তাতে নিশ্চিত যে এটা ফাঁদই ছিল।