বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বহুদিন যাবৎ জেলবন্দি ‘বীরভূমের বাঘ’ তৃণমূলের অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। জেলের ভেতর ঘানি ঘোরাতে ঘোরাতে তার ওজন কিছুটা কমলেও কমেনি তার উকিলকে দেওয়ার জন্য অর্থের ভান্ডার। গরু পাচার কাণ্ডের (Cattle Smuggling Case) অন্যতম অভিযুক্ত কেষ্ট মণ্ডল নিজের বাঘাবাঘা আইনজীবীদের জন্য কত টাকা খরচ করছেন? অর্থের উৎসই বা কী? এই প্রশ্নই এখন চারা দিচ্ছে ইডির (ED) অন্দর মহলে।
গত নভেম্বর মাসে অনুব্রত মণ্ডলের একদা পরম সঙ্গী তথা দেহরক্ষী সেহগল হোসেনকে এজলাসের বাইরে ইডি-র এক তদন্তকারী অফিসার মজার ছলে জিজ্ঞাসা করছিলেন, এই যে তোমার হয়ে এত হেভি ওয়েট আইনজীবীরা সওয়াল করছেন, এদের খরচ কে জোগাচ্ছে? কোথা থেকে আসছে এত টাকা? সেই প্রশ্নের উত্তর না মিললেও জেলবন্দি অনুব্রতকে নিয়েও এই একই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গতবছর নভেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি আসানসোলের জেলের ভিতরে কেষ্ট মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল। এরপর কেটে গিয়েছে বহু দিন। সেই প্রথম থেকে অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লিতে নিয়ে আসার তোড়জোড় চললেও এখনও পর্যন্ত তার রাজধানী যাত্রা সম্ভব হয়নি। কারণ দিল্লি যাত্রা এড়াতে দিল্লি হাই কোর্টে একাধিক মামলা করছেন তৃণমূলের অনুব্রত।
পাশাপাশি দ্বারস্থ হয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টেরও। আদালতে কেষ্টর হয়ে মামলা লড়ছেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি ও কপিল সিব্বল। জানিয়ে রাখি, এই দু’জনেই সুপ্রিম কোর্টের প্রথম সারির আইনজীবী। শুধু এরাই নন অনুব্রতর হয়ে সওয়াল করেছেন দিল্লির দুই প্রসিদ্ধ অপরাধ মামলার আইনজীবী এন হরিহরণ এবং রমেশ গুপ্তও। পাশাপাশি কলকাতায় কেষ্টর হয়ে মামলা লড়েছেন প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত, প্রবীণ আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায়রা।
এত এত হেভিওয়েট আইনজীবীদের জন্য কত টাকা খরচ হচ্ছে? ওয়াকিবহালমহলের মত, শুধুমাত্র উকিলদের ফি হিসেবেই কোটি কোটি টাকা খরচ ঢালছেন অনুব্রত। তবে কোথা থেকে এত টাকা? প্রশ্ন উঠলেও উত্তর অধরা। অন্যদিকে, গত সপ্তাহে কলকাতা হাই কোর্ট একই সঙ্গে একাধিক জায়গায় মামলা করার জন্য ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে অনুব্রতকে।
আইনজীবীদের ফী প্রসঙ্গে ইডি-র এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, “গরু পাচার থেকে অনুব্রতের পকেটে কত টাকা ঢুকেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সেই টাকার সিংহ ভাগটাই অনুব্রত উকিলদের পিছনে খরচ করে ফেললেন কি না, সেটাও বোধহয় এবার খতিয়ে দেখা দরকার!”