বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আগের বছর ২১ জুলাই ঠিক একদিন পরেই নিয়োগদুর্নীতি মামলায় তৎকালীন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) বাড়িতে হানা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। প্রায় ২৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির পর ২৩ জুলাই নাকতলার বাড়ি থেকে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) গ্রেফতার করে তদন্তকারী সংস্থা।
এরপর পার্থবাবুর সূত্র ধরেই উঠে আসে ‘মডেল’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) নাম। এরপর অর্পিতার ফ্ল্যাটেও পৌঁছে যান গোয়েন্দারা।
আর সেদিনই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় টাকার পাহাড়। অর্পিতার টালিগঞ্জে ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে হিসাববহির্ভূত কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করে ইডি। রাত, দিন এক করে টাকা গোনা চলে পার্থ ‘বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে। উদ্ধার হয় কেজি কেজি শোনার গয়না। এরপর অর্পিতাকেও গ্রেফতার করে ED।
এখানেই শেষ নয়, পরদিন অর্পিতার রথতলার ফ্ল্যাটেও হানা দেয় ইডি। দুটি ফ্ল্যাট মিলিয়ে উদ্ধার হয় নগদ ৫০ কোটি টাকা এবং কোটি কোটি টাকার সোনা। উদ্ধার করা হয় একাধিক দলিল। ফ্রিজ করা হয় দুজনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। দু’জনের গ্রেফতারির পর একের পর এক জায়গা থেকে তাদের নামে বেনামে সম্পত্তির হদিশ পান গোয়েন্দারা। তখনই জানা যায়, বোলপুর শান্তিনিকেতনে (Santiniketan) ‘অপা’ নামে একটি বাগানবাড়ি ছিল তাদের।
পার্থ-অর্পিতা গ্রেফতারের পরই সেই বাড়ি চাক্ষুস করতে সাধারণ মানুষের ঢল নামে। এককথায় অপা পরিণত হয়েছিল পর্যটনকেন্দ্রে। পর্যটকদের বোলপুরে অপা ঘুরিয়ে দেখাতে তখন টোটোচালকদের ভীড়। তবে এখন আর সেই বালাই নেই। দীর্ঘ এক বছরে বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই।
পার্থ-অর্পিতা থাকাকালীন ওই বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করতেন নিখিল দাস ও তার স্ত্রী ধর্ণা দাস। জানা গিয়েছে, এখনও পার্থ-অর্পিতার ‘অপা’ তারাই দেখাশোনা করেন। ঝর্ণা দাস জানান মাসিক ৪ হাজার টাকা করে বেতন পেতেন। তবে গত এক বছর ধরে তারা বেতন পাননি। যদিও তার জেরে কাজ ছাড়েননি কেউই। ওই বাড়ি সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখেন তারাই। বাড়ির চাবিও রয়েছে নিখিল ও ঝর্ণার কাছেই।